জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা শেষে শত পুরস্কার বিতরণ করেছে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটি।
শনিবার বিকালে শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মিলনায়তনে শত শিশুদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়।
শুণ্য থেকে দ্বাদশ শ্রেনী পর্যন্ত চার ধাপে একশত শিশুদের মাঝে 'ক' শাখার জন্য একটি করে কমিক বুক, গ্লোব, বঙ্গবন্ধুর অবয়ব ক্রিষ্টাল, তিন প্যাকেট রং, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী মেখ হাসিনার স্বাক্ষরিত সার্টিফিকেট, টপ সহ গাছ ও প্রথম স্থান অর্জন কারিদের জন্য বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া খ-গ-ঘ শাখার শিশুদের প্রতিটি প্যাকেটে যুক্ত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, একাওরের সহযোদ্ধা, কারাগারের রোজনামচা, আমার দেখা নয়া চিন, শত বর্ষে বঙ্গবন্ধুর বই।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, “বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আজেএই শিশুরা ছবি এঁকেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান সব সময় শিশুদের ভালোবাসতেন, আজকের শিশুরা বঙ্গবন্ধুকে বুকে ধারণ করেই আগামীদের নেতৃত্ব দেবে দেশকে, এটাই আমি আশা করি।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, “সমাজ থেকে সাংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে। এই বাংলায় হাজার বছরের সংস্কৃতি ছিল ভাটিয়ালী, জাড়ি-সাড়ি ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি। যাত্রাপালা হারিয়ে গেছে, নাটকও হারানোর পথে। সঙ্গীত চর্চা এটাও আবার ধর্মে কোন ক্ষতি হয় কি না এর জন্য চিন্তায় পড়ে অনেক বাবা মা নিরুৎসাহিত করে।
“লেখা পড়ার পাশাপাশি মানুষের মনের চিত্তবিনোদনের জায়গাটাও খোলা রাখতে হবে। আজকে আমাদের দেশ থেকে লোক সাহিত্য হারিয়ে যাওয়ার কারণে ধর্মের নামে আজকে অধর্ম আমাদের জেঁকে বসেছে। গ্রামে গঞ্জে নাটক যাত্রার বদলে ওয়াজ মাহফিল হয়। এই ওয়াজ মাহফিলের নামে এমন সব কথাবার্তা হয় যেটা রিতিমত ইসলাম ধর্মের বিশ্বাসীদের শঙ্কিত করে তুলে। এই ধরণের মিথ্যাচার এই ধরণের অযৌক্তিক হাস্যকর কথা বললে অন্য ধর্মের মানুষের কাছে আমরা হাসির পাত্র হয়ে পড়ছি। আজকের শিশুদের চিত্রকর্মের পাশাপাশি সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে গড়ে তুলতে হবে।”
আওয়ামী লীগ বাঙালি ও বাংলাদেমের এগিয়ে নিতে কাজ করছে জানিয়ে বিশ্ববরেন্য চিত্রশিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমাদের ভাষা, আমাদের গান, চিত্রকলাসহ সংষ্কৃতি এগিয়ে নিতে হবে। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে তা অন্য আকার ধারন করতো। আওয়ামী লীগ তো বাঙালির কথা বলছে। বঙ্গবন্ধু বলতেন আমি মুসলমান, আমি বাঙালি। আওয়ামী লীগ সেই আদর্শ ধারন করে এগিয়ে যাচ্ছে। এই মুহুর্তে পৃথিবী কোন দিকে যাচ্ছে তা অন্য কোনো দল বুঝতে পারছে না একমাত্র আওয়ামী লীগ বুঝতে পারছে। আওয়ামী লীগই বাংলাদেশ, এটাকে স্বীকার করতে হবে।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও আসন্ন টি টোয়েন্টিট বিশ্বকাপের জাতীয় সঙ্গীত ধারন করার কাজে ব্যস্ত থাকায় আসতে পারেন নি জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা।
অনুষ্টানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে মাশরাফি বিন মোর্ত্তজা বলেন, “রং তুলির আচড়ে যে ছোট্ট শিল্পীরা নানা আঙ্গিকে চিত্রায়িত করেছেন আমাদের জাতির পিতাকে তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আমাদের জাতির পিতা শিল্প কাব্য গানে চিত্রকলায় চিত্রিত হয়ে এভাবেই বেঁচে থাকবেন প্রতিটি বাঙালির অন্তরে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুকি মোকাবিলা করে আগামী প্রজন্মের জন্য টেকসই ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করতে বৈশ্বিক নেতৃবৃন্দের প্রতি শেখ হাসিনার আহ্বানের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে মাশরাফি বলেন, “পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার মাধ্যমে সুন্দর আগামী গড়তে সবাইকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে সচেতনতা, পরিশেষ দুষণ রোধ এবং বৃক্ষরোপন কর্মসূচি জোরদার করার নাগরিক দায়িত্ব।”
পরিবেশ রক্ষায় আওয়ামী লীগ কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ কমিটি বৃক্ষরোপনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে। সরকারি হিসেবে ইতিমধ্যে বনভূমি ২২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা পরিবেশ সংরক্ষনে শেখ হাসিনার সরকারের একটি বড় সাফল্য।”
বন ও পরিবেশ উপ-কমিটি চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের সাবেক উপ উপাচার্য অধ্যাপক নাসরীন আহমাদ বক্তব্য রাখেন।
আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য সচিব দেলোয়ার হোসেন অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন।
এ সময় অতিথিদের একটি ব্যাগে শত বর্ষে বঙ্গবন্ধু বই, শেখ কামাল মুক্তপ্রণের প্রতিনিধি, বঙ্গবন্ধুর অবয়ব ক্রিষ্টাল, বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য ও টপ সহ গাছ উপহার তুলে দেন দেলোয়ার হোসেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: