দীর্ঘদিন ধরে কঠোর বিধিনিষেধের পর আগামী বুধবার থেকে শর্তসাপেক্ষে অফিস ও গণপরিবহনসহ সবকিছু খুলে দেওয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে রোববার আদেশ জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
এতে বলা হয়, গত ৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত আন্ত মন্ত্রণালয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের আর্থ সামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আগামী ১১ আগস্ট থেকে গণপরিবহন, সব সরকারি-আধাসরকারি- স্বায়ত্তশাসিত অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দোকানপাট ও শপিংমলও খোলা থাকবে।
প্রজ্ঞাপনে বিধি-নিষেধ শিথিল করা হলেও সব ক্ষেত্রে মাস্ক পরিধান নিশ্চিত এবং স্বাস্থ্যবিধি পরিপালন নিশ্চিত করতে কঠোর হওয়ার কথা জানানো হয়।
প্রজ্ঞাপনে যা আছে:
১.সব সরকারি/আধাসরকারি/স্বায়ত্তশাসিত/বেসরকারি অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক খোলা থাকবে।
২. বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতসমূহের বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবেন।
৩. সড়ক, রেল ও নৌ-পথে আসন সংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন/যানবাহন চলাচল করতে পারবে। সড়ক পথে গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন (সিটি কর্পোরেশন এলাকায় বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক) নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সংশ্লিষ্ট দপ্তর/সংস্থা, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিদিন মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক চালু করতে পারবে।
৪. শপিংমল/মার্কেট/দোকানপাটসমূহ সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে খোলা রাখা যাবে।
৫. সব ধরনের শিল্প-কলকারখানা চালু থাকবে।
৬. খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁ অর্ধেক আসন খালি রেখে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।
৭. সব ক্ষেত্রে মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক প্রণীত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
৮. গণপরিবহন, বিভিন্ন দপ্তর, মার্কেট ও বাজারসহ যেকোনো প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অবহেলা পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব বহন করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লিখিত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সব সচিব এবং বিভাগীয় কমিশনারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আগামী ১১ আগস্ট থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এসব শর্ত মানতে হবে।
গত ১ জুলাই থেকে কঠোর বিধি-নিষেধ শুরু হলেও ঈদের সময় আটদিন বিরতি দিয়ে গত ২৩ জুলাই সকাল ৬টা থেকে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করে সরকার। তা শেষ হয় ৫ আগস্ট। এর মধ্যে বিধি-নিষেধ ১০ আগস্ট পর্যন্ত আরেক দফা বাড়ানো হয়। বিধি-নিষেধের মধ্যেই গত ১ আগস্ট থেকে রপ্তানিমুখী শিল্প-কলকারখানা খুলে দেওয়া হয়।
কিন্তু করোনা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় কঠোর বিধি-নিষেধ শিথিল করে মানুষের চলাচলের সুযোগ দিয়ে কিছু শর্ত আরোপ করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হলো।
প্রজ্ঞাপন জারির আগে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ধাপে ধাপে শিথিল হবে বিধি-নিষেধ। তবে সর্বাবস্থায় মাস্ক পরতে হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: