করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ৫ এপ্রিল থেকে ১১ এপ্রিল সাত দিনের জন্য কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। জনগণকে এ নির্দেশনা মানাতে রাজধানীর প্রবেশপথগুলোসহ নানা সড়কে চেকপোস্ট বসাবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
ডিএমপি জানায়, গাবতলী, যাত্রাবাড়ী, উত্তরাসহ ঢাকার প্রতিটি প্রবেশপথে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হবে। কোনো গণপরিবহন যাতে ঢাকায় প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে কড়া নজরদারি করা হবে। এছাড়াও কয়েকটি চেকপোস্টে পুলিশের সঙ্গে থাকবেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। কেউ যদি মুখে মাস্ক ছাড়া সড়কে চলাফেরা করেন তাদের ধরে জরিমানা করা হবে।
সড়কের পাশাপাশি নৌপথেও অবস্থান নেবে পুলিশ। রাজধানীর কোনো পার্ক ও বিনোদনকেন্দ্র যেন কেউ জড়ো হতে না পারে সেক্ষেত্রে কঠোর অবস্থানে থাকবে পুলিশ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের(ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ঢাকার বিভিন্ন এন্ট্রি পয়েন্টে পুলিশ চেকপোস্ট করবে। এছাড়াও ঢাকার ভেতর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টেও চেকপোস্ট করা হবে। চেকপোস্টে সরকারের জারি করা প্রজ্ঞাপনে দেওয়া নির্দেশনাগুলো পালনে কাজ করবে পুলিশ।
প্রজ্ঞাপনে দেওয়া নির্দেশনাগুলো হলো-
১. সড়ক, রেল, আকাশ ও নৌপথে সব ধরনের গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। তবে পণ্য পরিবহন ও উৎপাদন ব্যবস্থাসহ জরুরি সেবা দানের ক্ষেত্রে এ আদেশ প্রযোজ্য হবে না। এছাড়া বিদেশগামী ও বিদেশফেরত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে না।
২. আইনশৃঙ্খলা ও জরুরি পরিষেবা যেমন- ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, স্থলবন্দর, নৌবন্দর ও সমুদ্র বন্দর কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট সেবার জরুরি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য ও সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসসমূহ এবং তাদের কর্মচারী ও যানবাহন এই নিষেধাজ্ঞার আওতা বহির্ভূত থাকবে।
৩. সব সরকারি-আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত অফিস-আদালত এবং বেসরকারি অফিস কেবল জরুরি কাজ সম্পাদনের জন্য সীমিত পরিসরে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়ে প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থাপনায় অফিসে আনা নেওয়া করতে পারবে। শিল্প-কারখানা ও নির্মাণকার্য চালু থাকবে। শিল্প-কারখানার শ্রমিকদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পরিবহন ব্যবস্থাপনায় আনা-নেওয়া করতে হবে। বিজিএমইএ ও বিকেএমইএকে শিল্প-কারখানা এলাকার নিকটবর্তী সুবিধাজনক স্থানে তাদের শ্রমিকদের জন্য ফিল্ড হাসপাতাল/চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
৪. সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত (ঔষধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ক্রয়, চিকিৎসাসেবা মৃতদেহ দাফন/সৎকার ইত্যাদি) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে বের হওয়া যাবে না।
৫. খাবারের দোকান ও হোটেল-রেস্তোরাঁয় কেবল খাদ্য বিক্রয় ও সরবরাহ করা যাবে। কোনো অবস্থাতেই হোটেল-রেস্তোরাঁয় বসে খাবার খাওয়া যাবে না।
৬. শপিং মলসহ অন্যান্য দোকান বন্ধ থাকবে। তবে দোকানগুলো পাইকারি ও খুচরা পণ্য অনলাইনের মাধ্যমে ক্রয়-বিক্রয় করতে পারবে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই সর্বাবস্থায় কর্মচারীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে এবং অন্য কোনো শহরে যেতে পারবে না।
৭. কাঁচা বাজার ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উন্মুক্ত স্থানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্রয়-বিক্রয় করা যাবে। বাজার কর্তৃপক্ষ/স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি নিশ্চিত করবে।
৮. ব্যাংকিং ব্যবস্থা সীমিত পরিসরে চালু রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করবে।
৯. সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ঢাকায় সুবিধাজনক স্থানে ফিল্ড হাসপাতাল স্থাপনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
১০. সারাদেশে জেলা ও মাঠ প্রশাসন উল্লেখিত নির্দেশনা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত টহল জোরদার করবে।
১১. এ আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: