ত্রাণ চাই না,খাদ্য চাইনা চাই টেকসই বেড়িবাঁধ

সময় ট্রিবিউন | ২৭ মে ২০২১, ০২:৪২

ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ

২৬ শে মে (বুধবার) সকাল থেকে ঘূর্ণিঝড় 'ইয়াস' এর প্রভাবে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলে নদ-নদীতে অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভেড়িবাঁধ ছাপিয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করছে পানি।

এতে মারাত্মক আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা। জরাজীর্ণ বেড়িবাঁধে মঙ্গলবার থেকে উত্তাল নদ-নদীর ঢেউ আচড়ে পড়ে এখন কঙ্কালসার বেড়িবাঁধ কোন মতে টিকিয়ে রেখেছে উপকূলবাসীকে।


বুধবার সকাল থেকে স্থানীয়রা কঙ্কালসার বেরিবাধ কোনমতে মাটি দিয়ে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করলেও বুধবার দুপুরে জোয়ারে সরে যাচ্ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে,ভরা পূর্ণিমার সাথে ঘূর্ণিঝড় 'ইয়াস' এর প্রভাবে সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপকূলে নদ-নদীতে ৪ ফুট পানি বেড়েছে। নদনদী উত্তাল রয়েছে। শ্যামনগর উপজেলার গাবুরার লেবুবুনিয়া, পদ্মপুকুরের কামালকাটি, বুড়িগোয়ালিনীর দাতিনাখালি ও দুর্গাবাটি,কৈইখালীর জায়াখালী, নুরনগর এর দক্ষিণ কুলতলী, দরমুজ খালী,
কালীগঞ্জ উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী হাড়দ্দহ,
কালিন্দী নদী, কাকশিয়ালী নদীর গোবিন্দকাটি খেয়াঘাট,নাজিমগঞ্জ বাজার মোড়, হাসপাতাল মোড়, দেবহাটার শাখরা কোমরপুর,

খুলনা জেলার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়ন এর আংটিহারা এলাকা সহ কয়েকটি পয়েন্টে ভেড়িবাঁধ ছাপিয়ে নদীর উত্তাল পানি হু হু করে লোকালয়ে প্রবেশ করছে।

২৬ মে আজ সারা দিন ব্যাপী জেলার শ্যামনগর,কালিগঞ্জ, আশাশুনিত ও দেবহাটা উপজেলার একাধিক ঝুঁকিপূর্ণ উপকূলীয় এলাকায় স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে,

বুধবার ভোর থেকেই সুন্দরবনসংলগ্ন নদ-নদী ভাটার সময়ও উত্তাল ছিল।
বেলা বাড়ার সাথে সাথে আরো উত্তাল হয়ে ওঠে নদীর পানি। আজ সকাল থেকে কালো মেঘাচ্ছন্ন আকাশে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে সাতক্ষীরার আকাশে।আবহাওয়া এখনো অপরিবর্তিত আছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা থেকে ইতিমধ্যে স্থানীয়রা ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সরিয়ে নিয়েছে।

উপকূলীয় এলাকার কোস্টগার্ডকে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত থাকতে দেখা গেছে।


পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও মাসুদ রানা জানান,তাদের সব কর্মকর্তা এখন উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান করছেন। ভেড়িবাঁধ টিকিয়ে রেখে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে জেলা প্রশাসন এবং স্থানীয়দের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সর্বশেষ বুধবার বিকাল পাঁচটায় প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, জেলার শ্যামনগর উপকূলীয় এলাকার স্থানীয়দের কোনো জান-মালের ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় 'ইয়াস' থেকে বাংলাদেশ অনেকটা ঝুঁকিমুক্ত বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শামসুদ্দিন আহমেদ।

সব মিলিয়ে প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় 'ইয়াস' এর প্রভাবে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে অবস্থিত সাতক্ষীরা জেলার উপকূলীয় জনপদের মানুষেরা চরম আতংকের মধ্যে দিনাতিপাত করছে।তাদের একটাই চাওয়া, তারা ত্রাণ চাই না-
খাদ্য চাইনা, চাই টেকসই বেড়িবাঁধ।

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


জনপ্রিয় খবর