গণতন্ত্র চাইলে এবং ক্ষমতা পরিবর্তনের জন্য সহিংসতার পথ পরিহার করে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে আসার জন্য বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি রোববার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতি’র রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, “সহিংসতার পথ পরিহার করে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে আসুন। যদি গণতন্ত্র চান, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের বিকল্প নেই। ক্ষমতা পরিবর্তনে নির্বাচনের বিকল্প নেই। সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। তবে যদি কেউ মনে করে থাকেন যে সহিংসতার মাধ্যমে অপকর্ম করে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ভন্ডুল করবেন, সেটা আপনাদের করতে দেয়া হবে না।”
কাদের বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক ধারাকে বাধাগ্রস্থ করার জন্য বিএনপি জামায়াত তাদের চিরাচরিত রূপে আবির্ভুত হয়ে নৃশংস সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়েছে। তিনি বলেন, তাদের তথা কথিত সমাবেশের নামে জনমনে যে আতঙ্ক ছিলো, তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে তা আজ সত্য হিসেবে প্রমানিত হয়েছে। বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী নয় বলে এ ধরণের বর্বরোচিত কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, “গতকাল তারা নৃশংস হামলা চালিয়ে নিষ্ঠুর ভাবে একজন পুলিশ সদস্যকে হত্যা করেছে, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করেছে, পুলিশ হাসপাতালে হামলা করেছে। এগুলো ছিলো তারেক রহমানের ট্যাগ ব্যাক।”
তিনি বলেন, বিএনপি ঐতিহ্যগতভাবেই একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। কানাডার ফেডারেল আদালতে এই পর্যন্ত ৬ বার বিএনপিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে রায় দিয়েছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন ভন্ডুল করতে ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডের পথ বেছে নিয়েছে তারা।
তিনি বলেন, “বিএনপি রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে দৃষ্টতা দেখিয়েছে, চ্যালেঞ্জ করেছে। গণমাধ্যমকে রুদ্ধ করার অপচেষ্টা চালানোর মধ্য দিয়ে সমগ্র রাষ্ট্রকে জিম্মি করে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। আমরা বারবারই বলেছি, বিএনপি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কথা বলে, আসলে তারা তাদের রাজনীতির সন্ত্রাসী ধারা, সেই ধারা বাস্তবায়নের জন্য গোপনে প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। তারা তাদের ভয়ঙ্কর রাজনীতির পুরানো চেহারায় ফিরে আসার জন্য সময় নিচ্ছিলো, সময়মত তারা তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পথ বেছে নিয়েছে।”
তিনি বলেন, “দেশের প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা মানে তাকে অবজ্ঞা ও অপমান করা। সমগ্র জাতিকে জিম্মি করে যে কোন উপায়ে ক্ষমতা দখল তাদের উদ্দেশ্য।”
কাদের বলেন, আন্দোলনের নামে তারা সবই করেছে, সব অপকর্মের প্রদর্শন তারা করেছে। ৩০ জন সাংবাদিক আহত হয়েছে। ঘটনা দেখে যারা সত্যটা লিখে, তারাও বিএনপি’র রোশানলে পড়েছে। একজন পুলিশকে হত্যা করে লাশের উপর আবারও হামলা করেছে তারা। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
তিনি বলেন, বিএনপি সন্ত্রাসীদের প্রধান বিচারপতির বাসভবন, জাজেজ কমপ্লেক্সে হামলা রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করার মত নিকৃষ্ট দৃষ্টান্ত। হাসপাতালে প্রবেশ করে রোগীদের উপর হামলা গাজায় ইসরায়েলীদের হামলার ঘটনা মনে করিয়ে দেয়।
পুলিশ হত্যাকে পরিকল্পিত দাবি করে কাদের বলেন, গতকাল পুলিশকে হত্যা করা তাদের ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিত খুনের ঘটনা। বিএনপির সন্ত্রাসীরা পুলিশকে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। বিএনপি সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে, অন্ধাকরের পথ বেছে নিয়েছে। পরবর্তিতে আওয়ামী লীগের অবস্থান কি থাকবে জানতে চাইলে কাদের বলেন, “আমরা গায়ে পরে কারো সঙ্গে লাগতে যাবো না, আমরা শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাই। এখন তারা আমাদের ওপর হামলা করলে, উদ্ভূত পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নেবো। সবাই সতর্ক অবস্থানে থাকবো।” এই পরিস্থিতিতে সরকার বিরোধীদের সঙ্গে কোন সংলাপে যাবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “তারা পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে, আর তাদের সঙ্গে সংলাপের প্রয়োজন নেই। আমরা আগ বাড়িয়ে সংলাপের দিকে কোন কথা বলবো না।”
এ সময়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ফারুক খান, আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, শাহজাহান খান, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর, কার্যনির্বাহী সদস্য মারুফা আক্তার পপিসহ কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: