গেল বছরে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনায় ২২৯ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করা সংগঠন 'রোড সেফটি ফাউন্ডেশন'। এতে টাঙ্গাইলের কালিহাতী এবং গাজীপুরের কালিয়াকৈর সড়কে সবচেয়ে বেশি ৭৮ জন মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়েছে দেখানো হয়েছে।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রোড সেফটি ফাউন্ডেশন থকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে দুর্ঘটনা ঘটে ১৩৩টি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪৭টি দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন মোটরসাইকেল আরোহীরা। মৃত্যুর সংখ্যা বিবেচনায় সবচেয়ে বেশি ৭৮ জন মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু হয়েছে দুর্ঘটনায়। এ ছাড়া ৫৪ জন অটোরিকশার যাত্রী এবং ৪৮ জন পথচারী দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন।
সংগঠনের থেকে বলা হয়েছে, সংবাদপত্র, ইলেকট্রনিকস মিডিয়া এবং সংগঠনের নিজস্ব তথ্যদাতাদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এসব তথ্য বিশ্লেষণ করে এক বছরে গাজীপুরের টঙ্গী থেকে বঙ্গবন্ধু টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত ১০৬ কিলোমিটার মহাসড়কে দুর্ঘটনার এই চিত্র উঠে আসে।
এলাকাভিত্তিক পর্যবেক্ষণে গত বছর টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ২৭টি দুর্ঘটনায় ৪২ জন এবং কালিয়াকৈরে ২৩টি দুর্ঘটনায় ৩৫ জন নিহত হন বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। কালিহাতী ও কালিয়াকৈর ছাড়া এই মহাসড়কের আরও ১৬টি এলাকায় দুর্ঘটনায় মৃত্যুর তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে টাঙ্গাইলের বঙ্গবন্ধু সেতুর গোলচত্বরে ১টি দুর্ঘটনায় ৬ জন, ভূঞাপুরে ৫টি দুর্ঘটনায় ৯, রাবনা বাইপাসে ৪টি দুর্ঘটনায় ৭ জন এবং মির্জাপুরে ১৫টি দুর্ঘটনায় ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। গাজীপুরের জয়দেবপুরে ৮টি দুর্ঘটনায় ১৭ জন, গাজীপুর সদরে ১২টি দুর্ঘটনায় ২৩, শ্রীপুরে ৯টি দুর্ঘটনায় ১৩, চন্দ্রায় ১টি দুর্ঘটনায় ২, কোনাবাড়ীতে ১টি দুর্ঘটনায় ১, গাছায় ৫টি দুর্ঘটনায় ৭, রাজেন্দ্রপুরে ২টি দুর্ঘটনায় ৪, টঙ্গীতে ১৫টি দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত। চন্দ্রায় ১টি দুর্ঘটনায় ১ জন, কড্ডায় ২টি দুর্ঘটনায় ৩ ও ফ্লাইওভারে ২টি দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত হন।
পর্যবেক্ষণ ও মন্তব্য
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার পরও দুর্ঘটনা ও হতাহত কমছে না। এর কারণ মহাসড়কে দ্রুতগতির ভারী যানবাহনের পাশাপাশি হালকা ও স্বল্পগতির অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, প্যাডেল রিকশা ইত্যাদি চলাচল করছে। এ ছাড়া মহাসড়কের যেকোনো স্থানে মানুষ ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছে। যানবাহনের বেপরোয়া গতিও দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে কাজ করছে।
এমন পরিস্থিতিতে মহাসড়কটিতে দুর্ঘটনা রোধ করতে হলে স্বল্প গতির যানবাহন চলাচলে সার্ভিস রোড নিশ্চিত করতে হবে, মহাসড়কে স্পিড ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। হাইওয়ে পুলিশের নজরদারি বাড়াতে হবে। উল্লেখ্য, মহাসড়কের কালিহাতী, মির্জাপুর, শ্রীপুর, টঙ্গী ও গাজীপুর সদর-স্পটগুলো অতি দুর্ঘটনাপ্রবণ হয়ে উঠেছে। এসব স্পটে দুর্ঘটনা রোধে কার্যকর পদক্ষেপ জরুরিভিত্তিতে গ্রহণ করতে হবে বলে জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: