কুখ্যাত ‘ইনডেমনিটি’ আইন সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার কালোদিন, ৯ জুলাই আজ। জাতির জনককে হত্যার বিচার না করার জন্য প্রবর্তিত আইনটিকে পৃথিবীর ইতিহাসেই লজ্জাজনক বলে মনে করেন আইনজ্ঞরা। তারা বলছেন, আইনটি প্রবর্তন শুধু নয় ২১ বছর তা বহাল রেখে চরম রাজনৈতিক প্রতিহিংসার প্রমাণ দিয়েছে সে সময়ের বিএনপি ও জাতীয় পার্টি সরকার। এর জন্য বিচারক ও আইনজীবীদের বিবেকের দায়ও দেখেনে অ্যাটর্নি জেনারেলসহ আইনজ্ঞরা।
যার নেতৃত্বে, সংগ্রামে বাংলাদেশ, তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সেই মহানায়ককে পরিবারসহ নির্মমভাবে হত্যা করা হয় ৭৫ এর ১৫ আগস্ট। শোকে মুহ্যমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশ। শোকের এমন আবহে আরও নিষ্ঠুরতার পথ নেয় হত্যাকারীরা। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানের হত্যার বিচার যাতে না হয়, এ জন্য খন্দকার মোশতাকের সরকার ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে। পচাত্তরের ২৬ সেপ্টেম্ব এ নিয়ে আইন প্রণয়ন করা হয়। ১৯৭৯ সালের ৯ জুলাই, জিয়াউর রহমান ৫ম সংশোধনীর মাধ্যমে আইনটি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেন। এতে সাংবিধানিকভাবে বন্ধ হয়ে যায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার।
কলঙ্কজনক এই আইনের কলঙ্ক থেকে জাতি মুক্ত হয় ১৯৯৬ সালে। ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ রহিতকরণ বিল’ সংসদে পাস হয়। ২০১০ সালে সংসদে ৫ম সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করেন।
কোনো হত্যাকাণ্ডের ন্যায্য বিচার পাওয়ার সমস্ত সুযোগ বন্ধ করে দেয়ার জন্য আইন করাকে সভ্যতার ইতিহাসে কলঙ্কজনক অধ্যায় বলে মনে করে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। যারা এই আইন প্রনয়নের সাথে জড়িত ছিলেন তাদের প্রত্যেকের রাষ্ট্রদ্রোহিতার বিচার হওয়া উচিত বলে মনে করেই এই আইন বিশ্লেষক।
আর মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান খানের প্রশ্ন, ২১ বছরেও কেন কোনো বিবেকবান বিচারক ও আইনজীবী কালো আইনটি নিয়ে সরব হননি?
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: