প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশকে ধ্বংস ও বিশ্বমঞ্চে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে লবিস্টদের দেওয়া কোটি কোটি ডলারের উৎস বিএনপিকে ব্যাখ্যা করতে হবে।
বৃহস্পতিবার একাদশ জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় এবং ১৬তম অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই অর্থ কোথা থেকে এসেছে, কীভাবে বিদেশে গেল, আর বিদেশি ফার্মকে এই লাখ লাখ বা কোটি কোটি ডলার যে তারা পেমেন্ট করল, এটা কোথা থেকে পেল এই জবাবদিহি তাদের করতে হবে। এটা তাদের ব্যাখ্যা দিতে হবে।’
কত লাখ ডলার বিএনপি খরচ করেছে? বিএনপি এই বৈদেশিক মুদ্রা কোথা থেকে পেয়েছে? কীভাবে খরচ করেছে? কীভাবে এবং কী জন্য তারা এই লবিস্ট রেখেছে—এসব প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকানো, নির্বাচন বানচাল, একে প্রশ্নবিদ্ধ করা, জঙ্গি ও জাতির পিতার হত্যাকারীদের রক্ষা, বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা এবং বাংলাদেশের অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতেই এ লবিস্ট নিয়োগ। কোনো ভালো কাজের জন্য নয়।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় আগের দিন যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপির লবিস্ট নিয়োগ করা নিয়ে কোটি কোটি বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনের তুলে ধরা পরিসংখ্যানের নথি সংসদের প্রসিডিংসে তাঁর ভাষণে অন্তর্ভুক্তির জন্য সংসদে পেশ করেন।
র্যাবের সাবেক ও বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এর পেছনে অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দেন। তিনি বলেন, ‘যারাই সন্ত্রাস দমনে সফল, যারা এই দেশকে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস থেকে রক্ষা করতে পেরেছে এবং সাধারণের জীবন বাঁচিয়েছে, মানবাধিকার সংরক্ষণ করেছে, তাদের ওপরই যেন আমেরিকার রাগ।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের তারা নিষেধাজ্ঞা দিল, তাদের অধিকাংশই সেদিন সন্ত্রাস দমনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছিল। আর এর পরে বাংলাদেশে আর কোনো সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটতে পারে নাই।’ সেদিন বিশেষ ভূমিকা রাখা ভালো অফিসাররা কেন আমেরিকার কাছে প্রশ্নবিদ্ধ বলেও তিনি প্রশ্ন তোলেন।
সরকারপ্রধান বলেন, তাঁর সরকার জনগণকে সম্পৃক্ত করেই এ সন্ত্রাস এবং জঙ্গিবাদ দমন করেছে, যেটা বিএনপির সৃষ্টি। ৫০০ জায়গায় বোমা হামলা, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, শাহ এ এম এস কিবরিয়াকে গ্রেনেড মেরে হত্যাসহ প্রভৃতির জন্য তিনি এ সময় বিএনপিকে অভিযুক্ত করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা বিরোধী দলে থাকতে বিএনপি-জামায়াতের গ্রেনেড হামলা, বোমা হামলা, গুলি, নির্যাতনের শিকার হয়েছি।’ সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া হত্যার তদন্তে বিএনপির জড়িত থাকার বিষয়টি বের হলেও অজ্ঞাত কারণে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে বিচারপ্রক্রিয়ায় বিঘ্ন সৃষ্টির অভিযোগ রয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: