জাতীয় পার্টির সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদ-ফাইল ছবি
রোববারের মধ্যে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্যকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির দুজন সাংসদ।
রোববার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দলের সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদ ও পীর ফজলুর রহমান এ দাবি জানান।
শিক্ষামন্ত্রীকে ডাবল মাস্ক পরে সিলেট যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে কাজী ফিরোজ বলেন, ‘শিক্ষামন্ত্রী আছেন, উনি বলেছিলেন যে তোমাদের দাবিদাওয়া রেখে ঢাকা আসো আমার সঙ্গে আলোচনা করতে। আমরা সবাই ছাত্র আন্দোলন করে এসেছি। আন্দোলনের মাঠ ছেড়ে কখনো ছাত্ররা কারও সঙ্গে দেখা করতে ঢাকা আসবে না, আমরা জানি। মন্ত্রীর উচিত ছিল ওখানে ডাবল মাস্ক পরে যাওয়া। মোনায়েম খান বহুবার আমাদের বঙ্গভবনে ডেকেছেন। আমরা তখন ছাত্র ছিলাম, আমরা বিয়ের দাওয়াত পেতাম না, আমাদের মিলাদের দাওয়াতও দিত না। বঙ্গভবনের দাওয়াতও কিন্তু আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা কখনো কোনো আন্দোলন করতে গিয়ে বঙ্গভবনের দাওয়াতে যাইনি। ছাত্ররা কেন আসবে আপনার কাছে। প্রতিটি ছাত্র আন্দোলন এ দেশে হয়েছে যৌক্তিকভাবে।’
শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনের কথা তুলে ধরে কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, ‘আর কোনো তদন্ত রিপোর্ট নয়, কারও সঙ্গে আলাপ–আলোচনা নয়, শিক্ষামন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী আছেন, ভাইস চ্যান্সেলরকে আজকের মধ্যেই ওখান থেকে প্রত্যাহার করে নিয়ে আসেন, ছাত্রদের ক্লাসে ফিরে যেতে সহায়তা করেন। কাজী ফিরোজ রশিদ বলেন, কয়েক দিন ধরে শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা উপাচার্য ও হাউস টিউটরের পদত্যাগের দাবিতে তাঁদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। তাঁরা ১১ দিন ধরে অনশনে আছেন, ১৬ জন ইতিমধ্যে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে গেছেন। এতে কারও টনক নড়ছে না।
জাপার এই সাংসদ বলেন, ‘যখনই যারা সরকারের থাকে, সে আন্দোলনকে তারা অযৌক্তিক মনে করে। ভাইস চ্যান্সেলর এমন কোনো স্থায়ী পদ নয় যে তিনি চলে গেলে ওই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাবে। একজন উপাচার্যকে সরাতে ছাত্ররা যদি অনশন করে, এর চেয়ে দুঃখজনক কিছু নেই। বুঝতে হবে ভাইস চ্যান্সেলরের ওপরে ছাত্রদের কোনো আস্থা নেই, বিশ্বাস নেই। তাঁর কোনো ভালোবাসা নেই, শ্রদ্ধাবোধ নেই এবং থাকা উচিত নয়। ওনার যদি বিন্দুমাত্র আত্মসম্মানবোধ থাকত, উনি অবশ্যই এখান থেকে সরে আসতেন। উনি জোর করে বসে আছেন পুলিশ ঘেরাও করে।’
জাপার আরেক সাংসদ পীর ফজলুর রহমান বলেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে লাগাতার আন্দোলন চলছে। শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের সঙ্গে আলাপ করতে গেলে গ্রেনেড হামলা, লাঠিপেটা করা হয়েছে। ছাত্রদের ওপর আক্রমণ করার কারণেই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে তাঁরা আন্দোলন শুরু করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে ভিসি কোনো আলোচনা না করার কারণে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনে গিয়েছেন। অনশনে অসুস্থ হয়ে শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। কিন্তু উপাচার্য আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে নির্লজ্জের মতো পদে আছেন। যে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ভিসিকে চান না, কিন্তু লখিন্দরের বাসার মতো সুরক্ষা নিয়ে নিজের বাসায় বসে আছেন। তিনি পদত্যাগ করবেন না। তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলবেন না। স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করতে না চাইলে সরকারের উচিত আজকের মধ্যে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: