উৎসবের দিনটিতে সবাই চায় নিজেকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে। উৎসব বলে কথা! এ দিন চাই ত্বকে বাড়তি উজ্জ্বলতা। ত্বক যদি হয় নিষ্প্রাণ তখন যতই মেকাপ করা হোক না কেন সাজ সুন্দরভাবে কখনই ফুটে উঠবে না। এজন্যই ঈদে ত্বকে বাড়তি উজ্জ্বলতা আনার জন্য প্রয়োজন বাড়তি যত্ন। বিশেষ করে যারা দিনের একটা বড় সময় চুলার পাশে কাটান এবং ঘরের বাইরে রোদ ও ধুলোবালিতে কাজ করেন- তাদের ত্বকের জন্য চাই বিশেষ রূপচর্চা। কারণ তাদের ত্বক সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
হাজারো কর্মব্যস্ততার মাঝে সৌন্দর্যসেবা কেন্দ্রে গিয়ে নিজের পরিচর্যা করিয়ে নেয়ার মত পর্যাপ্ত সময় খুব একটা পাওয়া যায় না। তাই বাড়িতে বসেই খুব সহজে কিছু ঘরোয়া প্যাক তৈরি করতে পারেন যা সময় বাঁচাবে, অর্থেও সাশ্রয় করবে, একই সঙ্গে ত্বক হবে দীপ্তিময়। তবে যে কোন ধরণের রূপচর্চা করার সময় অবশ্যই ত্বকের ধরন বুঝে উপাদান ব্যবহার করতে হবে, নইলে হিতে বিপরীত হতে পারে।
এখানে বিভিন্ন ত্বকের উপযোগী কয়েকটি ঘরোয়া প্যাক তৈরির নিয়ম দেয়া হল, যা ব্যবহার করে খুব সহজেই ত্বকে বাড়তি কোমলতা আনা সম্ভব।
স্বাভাবিক ত্বক
এ ধরনের ত্বকের অধিকারীরা খুব ভাগ্যবান, কারণ এদের সমস্যা খুব কম থাকে। তারপরও যত্নের প্রয়োজন হয়, নইলে আপনার সুন্দর স্বাভাবিক ত্বকও একসময় হয়ে পড়বে নিষ্প্রাণ। চন্দন বাটা ১ টেবিল চামচ, টমেটোর রস ১ চা চামচ এবং শসার রস ১ চা চামচ সবগুলো উপাদান একসাথে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করে মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। চালের গুঁড়া, দুধ, মধু, শসা ও গাজরের রস অল্প অল্প করে নিয়ে সবগুলো উপাদান একসাথে মিশিয়ে ত্বকে লাগান। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে মুখ ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বকের মরা কোষ দূর হয়ে ত্বক হবে উজ্জ্বল।
তৈলাক্ত ত্বক
এ ধরনের ত্বকের গ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত তেল নিঃসরিত হয়, ফলে মুখ ধোঁয়ার অল্প কিছুক্ষণ পরেই ত্বক আবার তেলতেলে হয়ে যায়। মুলতানি মাটির সাথে গোলাপ জল ও এক চা চামচ মধু মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এটি তৈলাক্ত ত্বকের জন্য খুব ভালো একটি মাস্ক। মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন। তারপর হালকা একটা ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। তৈলাক্ত ত্বকের একটি প্রধান সমস্যা হলো ব্ল্যাক হেডস ও হোয়াইট হেডস। মধুর সাথে চিনি অথবা লেবুর রসের সাথে লবন মিশিয়ে আক্রান্ত স্থানে সার্কুলার মোশনে হালকাভাবে মালিশ করতে হবে। এভাবে সপ্তাহে দুই দিন স্ক্র্যাবিং করলেই ব্ল্যাক হেডস ও হোয়াইট হেডস এর প্রকোপ কমে যাবে। মনে রাখবেন, আক্রান্ত স্থান ছাড়া অন্য কোথায় এই স্ক্র্যাব ব্যবহার করা যাবে না। তাছাড়া ব্রণ আক্রান্ত ত্বকেও এটি ব্যবহার করা যাবে না।
শুষ্ক ত্বক
এ ধরনের ত্বকের সমস্যা সবচেয়ে বেশি। ব্রণের প্রকোপ এবং দ্রুত বলি রেখা পড়ার সম্ভাবনা বেশি। তাছাড়া ত্বকে ময়েশ্চারাইজার অভাব থাকায় ত্বক প্রায়ই হয়ে পড়ে শুষ্ক ও প্রাণহীন। তাই শুষ্ক ত্বকে অন্য যে কোনো ত্বকের চেয়ে বেশি যত্নের প্রয়োজন হয়। দুধ ও মধুর সাথে কাঁচা হলুদ বেটে লাগলে উপকার পাওয়া যায়। তবে কারো হলুদে এলার্জি থাকলে হলুদ বাটা বাদ দিয়ে শুধু মধু লাগাতে পারেন। পেস্তা বাদামের পেস্ট ১ টেবিল চামচ, মধু ১ চা চামচ, ডিমের কুসুম ১ টি এই মিশ্রণটি লাগিয়ে ২০ মিনিট পর মুখ পরিষ্কার করে ফেলুন। দুধের সরের সঙ্গে এক চিমটি হলুদ ও কয়েক ফোঁটা গ্লিসারিন মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে ৫ মিনিট সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করতে হবে। একই মিশ্রণটি একটানা সাতদিন ব্যবহার করলে শুষ্কভাব অনেকটাই কমে আসবে। মাল্টার রসের সাথে মধু মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি বলি রেখা দূর করতে সাহায্য করে।
মনে রাখবেন ত্বকের যে কোনো প্যাক ব্যবহারের আগে অবশ্যই মুখ পরিষ্কার করে নিবেন। কোনো প্যাকই ১৫/২০ মিনিটের বেশি মুখে লাগিয়ে রাখবেন না।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: