জাল টাকা রাখার অভিযোগে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় সেনাবাহিনীর বরখাস্তকৃত কর্নেল শহিদ উদ্দিন খান এবং তার স্ত্রী ফারজানা আনজুম খানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
একই সঙ্গে তাদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরও ৬ মাস কারাভোগ করতে হবে। কর্নেল শহিদ উদ্দিন ও তার স্ত্রী ফারজানা আনজুম লন্ডনে পলাতক। আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাসহ সাজা পরোয়ানা জারি করেছে।
বুধবার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ সৈয়দা হাফছা ঝুমা এ রায় ঘোষণা করেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর কবীর আহাম্মদ রুমী এসব তথ্য জানিয়েছেন।
২০১৯ সালের ১৭ জানুয়ারি শহিদ উদ্দিন খানের স্ত্রীর মালিকানাধীন ক্যান্টনমেন্ট থানাধীন বারিধারা ডিওএইচএসের ২ নম্বর রোডের ১৮৪ নম্বর বাসায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে পাঁচটি গুলিভর্তি ম্যাগাজিনসহ একটি পিস্তল, ছয়টি গুলিভর্তি ম্যাগাজিনসহ আরেকটি পিস্তল, একটি শর্টগান, দুটি কার্তুজ এবং শর্টগানের দুটি ম্যাগাজিন উদ্ধার করে।
এ ছাড়া তাদের শয়নকক্ষের ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ার থেকে এক হাজার টাকার তিন বান্ডিল নোট যার পরিমাণ তিন লাখ টাকা। এ ছাড়া আর এক হাজার টাকার তিন বান্ডিল জাল টাকা উদ্ধার করা হয়, যার পরিমাণও তিন লাখ টাকা।
এ ঘটনায় কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের ফেইক কারেন্সি নোট টিমের পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) বিপ্লব কিশোর শীল ওই দিনই ক্যান্টনমেন্ট থানায় অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা করেন। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধ আইনেও একটি মামলা করা হয়।
পরে ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। এরপর আদালত আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন। মামলাটির বিচার চলাকালে আদালত ২১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
অস্ত্র আইনের মামলায় গত বছরের ১০ নভেম্বর শহিদ উদ্দিন খানসহ চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত।
বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলা ছাড়াও বরখাস্ত কর্নেল শহিদ উদ্দিন খান, তার স্ত্রী ফারজানা আনজুম খানের নামে ক্যান্টনমেন্ট থানায় অস্ত্র আইনে মামলা রয়েছে। সে মামলায় তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে।
এদিকে কর ফাঁকির একটি মামলা আছে শহিদ উদ্দিন খানের নামে। ওই মামলায় অপ্রদর্শিত আয় ও মিথ্যা তথ্য দেয়ার জন্য বিচারিক আদালত তাকে ৯ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।
এছাড়া ভুয়া দলিল তৈরি করে জমি বিক্রির একটি মামলা আছে শহিদ উদ্দিনের নামে। সে মামলায় বরখাস্ত কর্নেল শহিদ উদ্দিনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
বরখাস্তকৃত কর্ণেল শহিদের নামে মানি লন্ডারিং মামলার কার্যক্রম চলমান। সিআইডি মামলার তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। এছাড়া স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির বিবরণী জমা না দেওয়ার কারণে শহিদের নামে দুদকের করা মামলার কার্যক্রম তদন্তাধীন।
অন্যদিকে চেক জালিয়াতির মামলায় শহিদের পলাতক স্ত্রী ফারজানা আনজুম খান ও ২ মেয়ের প্রত্যককে ৩ বছরের সাজা দিয়েছে আদালত।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: