রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. সরকার সুজিত কুমারকে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে নাটোর-২ (সদর-নলডাঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) শফিকুল ইসলাম শিমুলের বিরুদ্ধে।
এঘটনায় জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চেয়ে রাবি অধ্যাপক সরকার সুজিত কুমার বৃহস্পতিবার রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
জিডিতে অধ্যাপক ড. সুজিত উল্লেখ করেন, ২০০৯ সালে ‘নাটোর জেলার ইতিহাস, ঐতিহ্য ও মুক্তিযুদ্ধ’ নামে আমার লেখা একটি গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। ২০১০ সালে গ্রন্থটির প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয়। এরপর ২০২১ সালের বইমেলায় দ্বিতীয় সংস্করণ প্রকাশিত হয়। গ্রন্থটিতে নাটোর সদর আসনের (নাটোর-২) এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুলের বাবা হাসান আলীর নাম রাজাকারের তালিকায় স্থান পেয়েছে। প্রথম গ্রন্থে ৩১০ পৃষ্ঠা, প্রথম সংস্করণের ৩৬১ পৃষ্ঠায় এবং দ্বিতীয় সংস্করণের ৬০০ পৃষ্ঠায় হাসান আলীর নাম মুদ্রিত হয়েছে।
জিডিতে অধ্যাপক ড. সুজিত বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। মাঠ পর্যায়ে তিন বছর যোগাযোগ করে নাটোর জেলার গ্রামগঞ্জ ঘুরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে সাক্ষাৎকার নিয়ে শহিদ মুক্তিযোদ্ধা এবং স্বাধীনতাবিরোধীদের নাম গ্রন্থটিতে সন্নিবেশিত করেছি। নাটোর কান্দিভিটার (পুরাতন কোর্টপাড়া) হাসান আলী কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন বলে একাধিক সাক্ষাৎকারদাতা তথ্য দিয়েছেন। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গ্রন্থটিতে রাজাকারের নামের তালিকায় হাসান আলীর নাম সংযোজন করেছি।
ড. সুজিত উল্লেখ করেন, বর্তমানে নাটোর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি গঠন নিয়ে নিজেদের মধ্যে দ্বিধা, দ্বন্দ্ব ও ভিন্নমত সৃষ্টি হলে আমার গ্রন্থটি আলোচনায় আসে। এরপর এমপি শিমুলের পক্ষ অবস্থান নিয়ে ইতোমধ্যে কিছু অপরিচিত সন্ত্রাসী আমাকে বারবার জীবননাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমি একজন নিরস্ত্র শিক্ষক। এখন আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এজন্য আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছি।
তবে এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুল হত্যার হুমকি অস্বীকার করেছেন।
তিনি বলেছেন, এটি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমি কাউকেই হুমকি দেইনি। এমনকি আমার কোনো সমর্থকও এর সঙ্গে জড়িত নয়। আমি ইতোমধ্যে রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি এবং নাটোরের এসপিকে বিষয়টি নিয়ে সুষ্ঠু তদন্তের জন্য বলেছি।
তিনি বলেন, ড. সুজিত কুমারের সঙ্গে নাটোরের কাদের যোগাযোগ আছে তদন্ত করলেই সব ষড়যন্ত্র বেরিয়ে আসবে। তিনি যে বইটি প্রকাশ করেছেন সেখানে প্রথম সংস্করণে নাম ছিল হাসান আলীর। সেখানে কোনো ঠিকানা ছিল না। এর পরের সংস্করণে হাসান আলীর সঙ্গে সরদার যুক্ত করেছেন। আমিও এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: