আজ আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস। সারা পৃথিবীতে গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিকভাবে দিবসটি পালিত হচ্ছে। ২০০২ থেকে কাজ শুরু করে ২০০৬ সালের মাঝামাঝি নাগাদ গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদ রচনা করে জাতিসংঘ।২০১০ সালের ডিসেম্বরে এই আন্তর্জাতিক সনদ কার্যকর হয়। তাতে ৩০ আগস্টকে আন্তর্জাতিক গুম-প্রতিরোধ দিবস ঘোষণা করা হয়। ইংরেজিতে নাম দেওয়া হয় ‘ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন ফর প্রটেকশন অব অল পারসন্স অ্যাগেইনস্ট এনফোর্সড ডিসঅ্যাপিয়ারেন্স’।
বিশ্বের অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ পালিত হবে আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস।আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে সোমবার (৩০ আগস্ট) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) দেশে গুম বন্ধ ও এর প্রতিটি অভিযোগ তদন্তে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে।
আসকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কমিশন গঠন করা ছাড়াও বেশ কয়েকটি দাবি তোলা হয়েছে। এগুলো হলো- গুমের শিকার সব ব্যক্তিকে অবিলম্বে খুঁজে বের করে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া, এ সংক্রান্ত অভিযোগ দায়েরের জন্য একটি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা এবং তা ব্যাপকভাবে প্রচার করা, দায়ীদের বিচারের সম্মুখীন করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গুমের শিকার ব্যক্তি ও তার পরিবারের যথাযথ পুনর্বাসন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, গুমসংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সনদ স্বাক্ষর করা, গুমের মতো গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগগুলোকে অস্বীকার না করে এ ধরনের ঘটনার বিচার নিশ্চিতে বিদ্যমান আইন কাঠামোতে পরিবর্তন আনা এবং ‘অপহরণ’ হিসেবে নয়, ‘গুম’কে সুনির্দিষ্ট অপরাধ হিসেবে আইনে অন্তর্ভুক্ত করা।
গুমের মতো ঘটনা প্রতিরোধে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছেও তিনটি দাবি জানিয়েছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র। সেগুলো হলো- গুমের অভিযোগগুলো নিয়ে অনুসন্ধান করা; নিখোঁজদের খুঁজে বের করা এবং ভুক্তভোগীদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯-এ এ ক্ষেত্রে কোনো আইনি বাধা থাকলে তা দ্রুততার সঙ্গে দূর করতে সরকারের সঙ্গে জোর যোগাযোগ চালিয়ে যাওয়া, ভুক্তভোগী বা তাদের পরিবারকে আইনি ও নৈতিক সহায়তার উদ্যোগ গ্রহণ করা এবং গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারগুলোকে উত্থাপিত অভিযোগ নিয়ে একটি জাতীয় শুনানির আয়োজন করা।
আসক বলছে, ২০০৭ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশে মোট ৬১৪ জন গুমের শিকার হয়েছেন বলে ভুক্তভোগী পরিবার ও স্বজনেরা অভিযোগ করেছেন। এদের মধ্যে পরবর্তী সময়ে ৭৮ জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। গ্রেফতার দেখানো হয়েছে ৯৪ জনকে। ফেরত এসেছেন ৫৭ জন। অন্যদের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়নি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: