কাবুল বিমানবন্দরের কাছে ফের একটি বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা কিছু ছবিতে দেখা যাচ্ছে ধোঁয়ার কালো মেঘ আকাশের দিকে উঠছে।
আফগান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে, কাবুল বিমান বন্দর এলাকায় একটি বিস্ফোরণ ঘটেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেছেন, আজকের বিস্ফোরণটি বিমানবন্দরের কাছাকাছি একটি বাড়িতে একটি রকেটের আঘাতে হয়েছিল।
রকেটটি বিমানবন্দরে সরাসরি আঘাত করতে পারেনি। এ ছাড়া এই বিস্ফোরণে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কিনা তা এখনও জানা যায়নি।
এদিকে রয়টার্স বার্তা সংস্থা খবর দিচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র আজ কাবুলে একটি সামরিক হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় টার্গেট করা হয়েছিল ইসলামিক স্টেট গ্রুপের আফগান শাখার সদস্যদের।
মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে রয়টার্স এই খবর দিচ্ছে। তবে এর বিস্তারিত আর কিছু জানানো হয়নি।
বিমানবন্দরের কাছে শোনা বিস্ফোরণের সঙ্গে এই মার্কিন হামলার কোন সম্পর্ক আছে কীনা সেটাও পরিস্কার নয়।
তবে আল জাজিরার একজন সাংবাদিক, সেখান থেকে তার এক রিপোর্টে বলছেন, আজ সকালে তিনি কাবুল বিমানবন্দরে একটি মার্কিন বিমানও দেখেননি।
শনিবার রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আগামী ২৪ থেকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে আরেকটি হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। এরপরই আগের হামলার চারদিনের মাথায় আজ রবিবার ফের কাবুল বিমানবন্দরের কাছে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলো।
ড্রোন হামলায় গত বৃহস্পতিবারের বিস্ফোরণের মূল চক্রীকে হত্যার পর আইএসের খোরাসান গোষ্ঠী বদলা নেবে, এমন আশঙ্কা প্রকাশ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি জানান, রবিবারের মধ্যেই এ হামলার ঘটনা ঘটতে পারে বলে মার্কিন কমান্ডাররা তাকে জানিয়েছেন।
চারদিন আগের ভয়াবহ কাবুল বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছিল আইএসের খোরাসান গোষ্ঠী। এবারের বিস্ফোরণের পিছনে কারা, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
গত বৃহস্পতিবার বিমানবন্দরের বাইরে একটি আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরিত হয়। এতে ১৭০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়। নিহতের মধ্যে ছিল ১৩ জন আমেরিকান সেনা।
নেটোর অন্যসব দেশ এরই মধ্যে আফগানিস্তানে তাদের উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করে চলে এসেছে। সর্বশেষ বৃটেনের উদ্ধার ফ্লাইটগুলো গতকাল কাবুল ছেড়েছে। ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতও আফগানিস্তান ছেড়েছেন।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল, তারা শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চালিয়ে যাবে, অর্থাৎ ৩১শে অগাস্টের মধ্যে সৈন্য প্রত্যাহারের যে সময়সীমা বেঁধে দেয়া আছে, সেপর্যন্ত।
রয়টার্স বার্তা সংস্থা একজন পশ্চিমা নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলছে, এই অভিযান কখন শেষ হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি, তবে এখনো এক হাজারের মতো বেসামরিক নাগরিক বিমানবন্দরে আছে সেখান থেকে ফ্লাইট ধরার আশায়।
এদিকে তালেবান বলছে, ৩১ আগস্টের পর বিমানবন্দরের দায়িত্ব নেয়ার জন্য তারা পুরোপুরি প্রস্তুত।
এদিকে আফগানিস্তানে সবার অংশগ্রহনের ভিত্তিতে যে সরকার গঠনের কথা তালেবান দিয়েছিল, সেই আলোচনা কোন পর্যায়ে আছে, সে সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানা যাচ্ছে না। দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেছে তালেবান কাবুলে ঢুকেছে, কিন্তু এখনো দেশটিতে কার্যত কোন সরকার নেই।
তালেবানের একজন মুখপাত্র টেলিভিশনে এক ভাষণে বলেছেন, তারা যে সরকার গঠনের আলোচনা চালাচ্ছেন, সেটা সবাইকে নিয়েই করা হবে এবং শীঘ্রই আলোচনা একটা উপসংহারে পৌছাবে ।
তবে রবিবার তালেবান উচ্চশিক্ষা বিষয়ক একজন অস্থায়ী মন্ত্রী নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে। এর আগেও এরকম কিছু মন্ত্রী নিয়োগের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। তালেবান আফগানিস্তানের সব বাণিজ্যিক ব্যাংক খোলারও নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু বলেছে, লোকজন সপ্তাহে সর্বোচ্চ দুশত ডলার পর্যন্ত ব্যাংক থেকে তুলতে পারবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: