ইথিওপিয়ার তাইগ্রেতে চলমান যুদ্ধের কারণে যুদ্ধবিধ্বস্ত ওই অঞ্চলটির চার লাখেরও বেশি মানুষ এখন দুর্ভিক্ষের ভেতরে বাস করছেন। তাইগ্রে অঞ্চলের ৩৩ হাজার শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। এছাড়া ৮ মাসব্যাপী এই যুদ্ধ ও সংঘর্ষের কারণে আরও ১৮ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
জাতিসংঘের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে শনিবার (৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে একথা জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
টানা প্রায় ৭ মাস ব্যাপক বিধ্বংসী সেনা অভিযান চালানোর পর গত সোমবার তাইগ্রে প্রদেশে সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে ইথিওপিয়ার কেন্দ্রীয় সরকার। তবে ওই একইদিন তাইগ্রের রাজধানী মেকেলের দখল নিয়েছে ইথিওপিয়ার কেন্দ্রীয় সরকারবিরোধী সশস্ত্র রাজনৈতিক দল তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্ট (টিপিএলএফ)। ফলে, ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার স্বপ্রণোদিত হয়ে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছেন, না কি পরিস্থিতিগত কারণে করতে বাধ্য হয়েছেন- তা এখনও স্পষ্ট নয়।
সোমবার তাইগ্রের রাজধানী মেকেলেতে টিপিএলএফ যোদ্ধাদের প্রবেশ এবং সেখানে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়োগ দেওয়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তার ভবন দখল করার পরই অনেকটা তড়িঘড়ি করে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার।
ঘোষণায় বলা হয়েছে, ‘কৃষি উৎপাদনের বিষয়টি বিবেচনা করে তাইগ্রে প্রদেশে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। ২৮ জুন থেকে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। কৃষি মৌসুম শেষ হওয়া পর্যন্ত এই যুদ্ধ বিরতি চলবে।’
এর আগে তিগ্রাই অঞ্চলের প্রায় সাড়ে ৩ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছে বলে গত জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও দাতা গোষ্ঠীগুলোর করা একটি অপ্রকাশিত নথিতে উল্লেখ করা হয়েছিল। ওই অঞ্চলের লাখ লাখ মানুষকে দুর্ভিক্ষ থেকে রক্ষা করতে সেখানে জরুরি ভিত্তিতে খাদ্য এবং কৃষি ও জীবনধারণে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া দরকার বলেও নথিতে উল্লেখ করা হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বরে তাইগ্রেতে ইথিওপিয়ার একটি সামরিক ঘাঁটিতে আকস্মিক হামলা হয়। হামলার পর দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় এই প্রদেশের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল তাইগ্রে পিপলস লিবারেশন ফ্রন্টকে (টিপিএলএফ) ক্ষমতাচ্যুত করে সেখানে আইনের শাসন ফেরাতে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আবি আহমেদ। এরপর থেকেই টানা যুদ্ধ ও সংঘর্ষের কারণে ওই অঞ্চলটিতে তীব্র মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: