বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া অতিমারি করোনাভাইরাসের হানা পড়েছে বিশ্বের অনেক দেশেই। অন্যান্য দেশের মতো জাপানও এর বাইরে নয়। বিশ্বের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির উন্নত দেশ হওয়া সত্ত্বেও করোনার আঘাত থেকে মুক্ত হতে পারছে না জাপান। তবে, সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশটির সাফল্য রয়েছে অনেক।
জানা গেছে, সম্পূর্ণ লকডাউন না দিয়েও শুধুমাত্র এলাকাভিত্তিক জরুরি অবস্থা জারির মাধ্যমে করোনার সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে জাপান। এদিকে দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য বিনামূল্যে দুই ডোজ করে টিকা নিশ্চিত করে রেখেছে দেশটির সরকার।
গত বছরের ১৫ জানুয়ারি জাপানে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। এরপর প্রায় ১৮ মাস অতিবাহিত হয়েছে। এরমধ্যে করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলা করছে জাপান। তবুও দেশটির কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এর তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু রাখা রয়েছে। আগে যেখানে ভর্তি এবং সমাপণী পর্ব জাঁকজমকপূর্ণ এবং উৎসব মুখর পরিবেশে করা হত। সেখানে মহামারিতে শিক্ষার্থীদের স্কুল জীবন শুরু ও শেষ কিছুটা শিথিল এবং অনাড়ম্বর পরিবেশে সম্পন্ন করা হয়েছে।
গত বছরের ফেব্রুয়ারি জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে থাকা প্রমোদতরী ডায়মন্ড প্রিন্সেসে ১৭৫ জন করোনায় আক্রান্তের খবর প্রচার হলে ২ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত প্রাথমিক এবং জুনিয়র স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। যদিও মার্চ মাসে জাপানে স্কুলগুলো এমনিতেই ঢিলেঢালা চলে। কারণ জাপানে শিক্ষা কার্যক্রম এপ্রিল থেকে মার্চে শেষ হয়। গত বছরের ২৬ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত বসন্তকালীন ছুটি ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। এর মধ্যেও ৭ এপ্রিল নতুন বর্ষে শিশুদের স্বাগতম জানানো হয় অনাড়ম্বর আয়োজনের মাধ্যমে। পরে করোনার সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করলে ৬ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়।
তবে, গত বছরের ১ জুন থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দিয়ে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানতে প্রথমে কিছুদিন শিফট করে ক্লাস নেওয়া হয়।
গতবছর গ্রীষ্মকালীন ছুটি শেষে স্কুলগুলোর স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হয়। যা অব্যাহত আছে। জাপানে সবধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক কার্যক্রম চললেও সেখান থেকে করোনা ছড়াচ্ছে কিংবা শিক্ষার্থীরা আক্রান্ত হচ্ছেন- এমন কোনো তথ্য নেই সংশ্লিষ্টদের কাছে।
জাপানে করোনা শনাক্তের ১৮ মাসের মধ্যে মাত্র ৫৬ দিন বা প্রায় ২ মাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। সেখানে করোনা শনাক্তের ১৬ মাসের মধ্যে প্রায় ১৬ মাসই বন্ধ বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: