বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর সঙ্গে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর সংঘর্ষ দিন দিন বড় আকার ধারণ করছে মিয়ানমারে। জান্তা সেনাদের সঙ্গে বিরোধ, সংঘর্ষে কার্যত ভেঙে পড়েছে দেশটির নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এমনকি বাংলাদেশ ও ভারতে বাড়ছে অনুপ্রবেশ। প্রাণে বাঁচতে সীমান্তে ভিড় জমাচ্ছেন মিয়ানমারের নাগরিকরা।
এমন অবস্থায় ক্রমঅবনতিশীল পরিস্থিতির কারণে ভারতীয়দের মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে না যেতে সতর্কতা জারি করেছে দেশটির সরকার। এমনকি নাগরিকদের যারা সেখানে আছেন তাদের এখনই রাখাইন ছাড়তেও নির্দেশ দিয়েছে।
ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় ভারতীয় নাগরিকদের মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে ভ্রমণ না করতে পরামর্শ দিয়েছে ভারত। দেশটির সামরিক বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ার পর ভারত এই প্রথম এই ধরনের সতর্কতা জারি করল।
এনডিটিভি বলছে, মিয়ানমারে সহিংসতা বৃদ্ধির পর দেওয়া প্রথম নির্দেশনায় টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কে ব্যাঘাত এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ঘাটতিসহ বিদ্যমান পরিস্থিতির কারণে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতীয়দের রাখাইন প্রদেশে ভ্রমণ না করতে বলেছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি, ল্যান্ডলাইনসহ টেলিযোগাযোগের মাধ্যম ব্যাহত হওয়া এবং প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের তীব্র ঘাটতির পরিপ্রেক্ষিতে সকল ভারতীয় নাগরিককে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, ‘যে সকল ভারতীয় নাগরিক ইতোমধ্যেই রাখাইন প্রদেশে রয়েছেন তাদের অবিলম্বে প্রদেশটি ছেড়ে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে নেয় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এরপর থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দাবিতে ব্যাপকভাবে সহিংস বিক্ষোভের সাক্ষী হয়ে আসছে মিয়ানমার।
আর রাখাইন প্রদেশসহ দেশটির অন্যান্য অনেক অঞ্চলে গত বছরের অক্টোবর থেকে সশস্ত্র জাতিগোষ্ঠী এবং মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মধ্যে তীব্র লড়াই দেখা গেছে। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাত গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে ভারতের সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহর ও অঞ্চলে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে মণিপুর এবং মিজোরামের নিরাপত্তা নিয়ে নয়াদিল্লির উদ্বেগও বেশ বেড়েছে।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী তার বিরোধীদের লক্ষ্য করে এবং সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র সংগ্রাম পরিচালনাকারী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধেও বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: