আফগানিস্তানের তালেবান আন্দোলনকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে মধ্য এশিয়ার দেশ কাজাখস্তান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে। এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত শুক্রবার তালেবান গোষ্ঠীর নাম সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার কথা জানায় কাজাখস্তান। গত শুক্রবার কাজাখ রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা কাজিনফর্মকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আইবেক স্মাদিয়ারভ জানান, তালেবান জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে তালিকাভুক্ত নয়।
তিনি বলেন, ‘কাজাখস্তান নিয়মিতভাবে প্রজাতন্ত্রে নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর তালিকা খতিয়ে দেখে থাকে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে জাতিসংঘের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তালেবান আন্দোলনকে এই তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশন অনুযায়ী, তালেবান আন্দোলন নিরাপত্তা পরিষদে সন্ত্রাসী হিসাবে স্বীকৃত সংগঠনের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত নয়।’
তিনি বলেন, জাতিসংঘের অবস্থান এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ও নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদিত প্রস্তাবের ভিত্তিতে কাজাখস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে আরও যোগাযোগ গড়ে তোলা হবে।
এই পদক্ষেপের বিষয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, এই সিদ্ধান্ত কাজাখ ও আফগান কর্তৃপক্ষের মধ্যে সংলাপের বিকাশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা বজায় রাখতে এবং সন্ত্রাসবাদ ও মাদক চোরাচালানের মতো অপরাধের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অভিন্ন প্রচেষ্টাসহ পারস্পরিক বিশ্বাসকে আরও শক্তিশালী করতে পারে। এই পদক্ষেপটি আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা থেকে আফগানিস্তানের বের হয়ে আসা এবং বৈশ্বিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ায় দেশটির আরও যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে অবদান রাখবে এবং আফগান জনগণের জন্য মানবিক সহায়তার নতুন সুযোগ উন্মুক্ত করবে।
উল্লেখ্য, ২০ বছর পর ২০২১ সালের ১৫ আগস্ট আফগানিস্তান দখলে নেয় তালেবান। এরপর সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে তালেবান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার ঘোষণা দেয়। অবশ্য সরকার গঠন করলেও বিশ্বের কোনো দেশই এখনও পর্যন্ত তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। আর এর জেরে বিশ্বের অধিকাংশ দেশ ও এর পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতা সংস্থাও আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তাসহ অর্থ সাহায্য পাঠানো বন্ধ করে দেয়।
এর ফলে আফগানিস্তান বর্তমানে মানবিক সংকটের মধ্যে রয়েছে এবং এশিয়ার এই দেশটির ৩ কোটি ৮০ লাখ জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি খাদ্য সংকটের সম্মুখীন। এছাড়া পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এবং তালেবান প্রশাসনের আন্তর্জাতিক বিচ্ছিন্নতা এই পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলেছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: