এক বাসিন্দা কটাক্ষ করেন, ‘‘এতই যদি একসঙ্গে বসার শখ, তা হলে তো কোলে বসলেই হয়।’’ এই কটাক্ষ থেকেই পড়ুয়াদের মাথায় আসে প্রতিবাদের ভাবনাটি।
কলেজের সামনে একটি পুরনো যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে পাশাপাশি বসেই গল্পগুজব করতেন ছাত্রছাত্রীরা। তরুণ-তরুণীদের এ হেন পাশাপাশি বসা সহ্য করতে পারেননি স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রতীক্ষালয়ের বসার বেঞ্চটি ভেঙে তিন টুকরো করে দেন তাঁরা। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে অভিনব পদ্ধতি বেছে নিলেন ওই কলেজের পড়ুয়ারা। ওই ভাঙা বেঞ্চেই একে অপরের কোলে বসে প্রতিবাদ দেখালেন তাঁরা। কেরলের ত্রিবান্দম ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ঘটনা।
কেরলের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পড়ুয়াদের এই প্রতিবাদের ছবি ‘ল্যাপটপ প্রতিবাদ’ নামে রীতিমতো ভাইরাল হয়ে গিয়েছে নেটমাধ্যমে। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, বেশ কয়েক জন পড়ুয়া এক একটি বেঞ্চে একে অপরের কোলে বসে আছেন হাসিমুখে। কলেজের বিভিন্ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়ারা একসঙ্গে মিলে আয়োজন করেছিলেন এই প্রতিবাদের। তবে তাঁদের এই প্রতিবাদ শুধু স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য সীমাবদ্ধ নয় বলে জানিয়েছেন পড়ুয়ারা।
পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, যে স্থানীয় বাসিন্দারা এমন করেছেন তাঁদের জন্য তো বটেই, এমনকি, যাঁরা মনে করেন পড়াশুনার ক্ষেত্রে ছেলে-মেয়েদের আলাদা বসা উচিত, এই লড়াই তাঁদের বিরুদ্ধেও। লিঙ্গবৈষম্য এক ধরনের প্রতিবন্ধকতা। পড়ুয়াদের ছাত্র কিংবা ছাত্রী ভাবার আগে তাঁদের কেবল পড়ুয়া বলেই ভাবা উচিত বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
কিন্তু কেন এমন কোলে বসে প্রতিবাদ? পড়ুয়ারা জানাচ্ছেন, পাশাপাশি বসে কথা বলার সময় মাঝেমধ্যেই ভেসে আসত কটাক্ষ। বেঞ্চ ভেঙে দেওয়ার পর আরও বেড়ে যায় সেই সমস্যা। এর মধ্যেই এক বাসিন্দা কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘এতই যদি একসঙ্গে বসার ইচ্ছে থাকে, তাহলে তো কোলে বসলেই হয়।’’ এই কটাক্ষ থেকেই পড়ুয়াদের মাথায় আসে প্রতিবাদের ভাবনাটি।
ছাত্রছাত্রীদের ভাবনা নাড়া দিয়েছে প্রশাসনকেও। প্রতিবাদ ভাইরাল হতেই তিরুবনন্তপুরমের মেয়র তথা বামনেত্রী আর্যা রাজেন্দ্রন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি জানিয়েছেন, পুরসভার পক্ষ থেকে ওই বেঞ্চ আবার গড়ে দেওয়া হবে।
সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: