ইইউ কমিশন বিদেশী পর্যটকদের জন্য ভ্রমণে বিধিনিষেধ লাঘব করার পরামর্শ দিয়েছে। নতুন পরিকল্পনার আওতায়, কমপক্ষে দুই সপ্তাহ আগে যিনি ইইউ-অনুমোদিত ভ্যাকসিনের শেষ ডোজ পেয়েছেন তাকে ভ্রমণ করার অনুমতি দেয়া হবে।
গত কয়েক মাসে বহু দেশই নিয়ম করেছে, করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট থাকলে, তবেই প্রবেশাধিকার দেয়া হবে বিদেশিদের। কিছু কিছু দেশের সীমান্ত সম্পূর্ণ বন্ধ। এ বার নতুন নির্দেশিকা জারি করতে চলছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। টিকাকরণ সম্পূর্ণ হলে তবেই প্রবেশে অনুমতি। ইইউ-র অন্তর্গত ইউরোপের ২৭টি দেশ। সাতটি দেশ বাদে, বাকি বিশ্বের প্রবেশ নিষেধ এই দেশগুলিতে।
গত বছর জুলাই মাস থেকে এই নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। এ বার কিছুটা লঘু করা হচ্ছে সেই বিধি। ইউরোপীয় কমিশন জানিয়েছে, ব্লকের বাইরের কোনও দেশ থেকে ইইউ-এ ঢুকতে হলে সম্পূর্ণ টিকাকরণ চাই। ২৭টি দেশের এই ব্লককে মহামারি থেকে রক্ষা করতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ইইউ। বিশেষ করে যখন মিউট্যান্ট স্ট্রেনের আতঙ্কে ত্রস্ত গোটা বিশ্ব।
সোমবার প্রকাশিত নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ‘টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে, এমন ব্যক্তিদের ইইউ-এ ঢুকতে অনুমতি দেবে ব্লকের সদস্য দেশগুলি। তবে দু’টি শর্ত রয়েছে। ১) ইইউ-এ প্রবেশের অন্তত ১৪ দিন আগে টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে। ২) ইইউ-র ছাড়পত্র রয়েছে, এমন সংস্থার ভ্যাকসিন নিতে হবে ওই ব্যক্তিকে। ইইউ-এ টিকাকরণে ছাড়পত্র পাওয়া সংস্থাগুলি হল, বায়োএনটেক-ফাইজার, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজ়েনেকা, জনসন অ্যান্ড জনসন এবং মডার্না।
তবে ইইউ-র পক্ষ থেকে দেয়া বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এই তালিকা পরে আরও দীর্ঘ হতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যে সমস্ত প্রতিষেধককে জরুরি পরিস্থিতিতে ছাড়পত্র দিয়েছে, সেই তালিকায় থাকা অন্য ভ্যাকসিনগুলিকেও পরে যুক্ত করা হবে। ইইউ-এ এক দেশ থেকে অন্য দেশে যেতে হলে, এই মুহূর্তে করোনা পরীক্ষা আবশ্যক। সেই সঙ্গে নির্দিষ্ট সময় কোয়রেন্টিনে থাকতে হচ্ছে। ইউরোপীয় কমিশন জানিয়েছে, টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে বলে যদি ব্লকের অন্তর্গত বাসিন্দাদের এই বিধিনিষেধ থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়, সে ক্ষেত্রে একই যুক্তিতে ব্লকের বাইরে থেকে আসা পর্যটকদেরও করোনা-পরীক্ষা ও কোয়রান্টিন থেকে ছাড় দিতে হবে।
ঠিক কী পদ্ধতিতে পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার কথা ভাবছে ইইউ, তা-ও জানিয়েছে তারা। একটি ‘ডিজিটাল গ্রিন সার্টিফিকেট’ চালু করবে ব্লক। পুরো ব্যবস্থাটি কার্যকর হলে, টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে থাকা পর্যটকদের ওই সার্টিফিকেট দেয়া হবে। এই সার্টিফিকেট পেতে ব্লকের বাইরে থেকে আসা পর্যটকদের টিকাকরণের প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে যে দেশে তিনি যেতে চান, সেই দেশের সরকারকে। আপাতত দেশগুলিকেই খতিয়ে দেখতে হবে, ওই সার্টিফিকেটের স্বচ্ছতা। এবং সেই অনুযায়ী গ্রিন সার্টিফিকেট প্রদান।
এর পরেও কিছু বিষয় নির্ভর করবে। যেমন, যে দেশ থেকে পর্যটক আসছেন, সেই দেশে সংক্রমণ হার কেমন। ইইউ-র নিরাপদ তালিকায় সেই দেশ আছে কি না, ইত্যাদি। ইউরোপে সংক্রমণ হার বর্তমানে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে। বেশ কিছু দেশ ক্রমশ সুস্থ হয়ে উঠছে। ইইউ জানিয়েছে, এই অবস্থায় মিউট্যান্ট স্ট্রেনের হাত থেকে বাঁচতে, ফের নতুন কোনও সংক্রমণ-ঢেউ আছড়ে পড়া আটকাতে, এই পদক্ষেপ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সূত্র: বিবিসি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: