ভারতের ৯৭ কোটি মানুষের পুষ্টিকর বা সুষম খাদ্য জোগাড় করার সক্ষমতা নেই। অর্থাৎ দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭১ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যকর খাবার জোগাড় করতে পারেন না।
সম্প্রতি প্রকাশিত জাতিসংঘের একটি রিপোর্টে এমনই তথ্য উঠে এসেছে। শুক্রবার (৮ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) প্রকাশিত ওই রিপোর্ট বলছে, এশিয়া মহাদেশে ৪৩.৫ শতাংশ মানুষ সুষম খবার থেকে বঞ্চিত। সেখানে ভারতের প্রায় ৭১ শতাংশ মানুষ বঞ্চিত পুষ্টিকর খাবার থেকে। যা রীতিমতো উদ্বেগজনক।
জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী ৩০৭ কোটি মানুষের পুষ্টিকর খাবার জোগাড় করতে পারেনি। বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ৪২ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যকর খাবার থেকে বঞ্চিত। এছাড়া বৈশ্বিকভাবে দেশের তালিকায় সবচেয়ে খারাপ অবস্থা নেপালের। প্রতিবেশী এই দেশটির ৮৪ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যকর খাবার জোগাড় করতে অক্ষম।
এরপরে রয়েছে পাকিস্তান। দেশটিতে এই হার ৮৩.৫ শতাংশ, বাংলাদেশ ৭৩.৫ শতাংশ এবং এরপরে থাকা ভারতে এই হার ৭০.৫ শতাংশ। অন্যদিকে আফ্রিকার দেশগুলোতে স্বাস্থ্যকর খাবার থেকে বঞ্চিত ৮০ শতাংশ মানুষ।
এছাড়া চীনে ১২ শতাংশ, ব্রাজিলে ১৯ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ৪৯ শতাংশ মানুষ ২০২০ সালে স্বাস্থ্যকর খাবার জোগাড় করতে অক্ষম ছিলেন।
উল্লেখ্য, ভারতের প্রায় ৮০ কোটি মানুষ বা প্রায় ৬০ শতাংশ ভারতীয় খাবারের জন্য সরকার প্রদত্ত ভর্তুকিযুক্ত রেশনের ওপর নির্ভরশীল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনার অধীনে বিনামূল্যে পাঁচ কেজি খাদ্য শস্যের একটি বিশেষ মহামারি সহায়তা ছাড়াও মাত্র ২-৩ টাকা প্রতি কেজিতে উপভোক্তারা প্রতি মাসে পাঁচ কেজি চাল-ডাল ইত্যাদি হাতে পেয়ে থাকেন।
রিপোর্ট প্রকাশের সময় জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) মহাপরিচালক কু ডংইউ বলেন, ‘করোনা মহামারির অর্থনৈতিক প্রভাবের কারণে খাদ্য মূল্যস্ফীতির সৃষ্টি হয় এবং এই কারণে আরও ১১২ মিলিয়ন মানুষ স্বাস্থ্যকর খাবারের চাহিদা পূরণ করতে অক্ষম হয়েছে। এর অর্থ বিশ্বব্যাপী মোট প্রায় ৩১০ কোটি মানুষ পুষ্টিকর খাবার খেতে পারেনি।
‘দ্য স্টেট অব ফুড সিকিউরিটি অ্যান্ড নিউট্রিশন ইন দ্য ওয়ার্ল্ড ২০২২’ নামে রিপোর্টটি গত বুধবার প্রকাশিত হয়। এফএও’র তথ্যে আরও বলা হয়েছে, একজন মানুষের সারাদিনে সুষম খাবার খেতে খরচ হওয়ার কথা ২.৯৭ মার্কিন ডলার।
সেই হিসেবে ভারতে ৪ জনের পরিবারে মাসে ৭ হাজার ৬০০ রুপি প্রয়োজন। অর্থাৎ ভারতের ৯৭ কোটি মানুষই এই পরিমাণ ক্রয়ক্ষমতার নিচে বসবাস করেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: