সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগনিয়ন্ত্রণ বিভাগের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ বলেছেন, এখন যে অবস্থা চলছে, তাকে আমরা করোনা সংক্রমণের চতুর্থ ঢেউ বলতে পারি। এখন সংক্রমণের যে প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, তাতে বলা যায়, আমরা ইতিমধ্যেই চতুর্থ ঢেউয়ে প্রবেশ করেছি। এখন দেখার বিষয় এ ঢেউ কত দূর পর্যন্ত যায়।
বৃহস্পতিবার জাতীয় একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাতকারে এ আশঙ্কার কথা জানান অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ।
তিনি বলেন, দেশে প্রায় চার মাস পর এক দিনে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। সংক্রমণ বৃদ্ধি ও নতুন উপধরন শনাক্ত হওয়ায় সংক্রমণের নতুন ঢেউ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ মুহূর্তে সবচেয়ে জরুরি সংক্রমণের ধরন বিশ্লেষণ করা। বিশ্লেষণে কয়েকটি বিষয় থাকবে। প্রথমত, বের করতে হবে করোনার কোন ধরনে মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। এ ধরন সম্পর্কে জানতে পারলে জানা যাবে, এটি আমাদের কতটুকু ক্ষতি করতে পারে। এ ধরনের ঝুঁকি কতটা তীব্র হতে পারে, কত দ্রুত এটি ছড়াবে। এসব জানলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
দ্বিতীয়ত, যাঁরা এখন আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের তথ্যও বিশ্লেষণ করতে হবে। বিশ্লেষণে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বয়স, টিকা নেওয়ার অবস্থা ইত্যাদি জানতে হবে। যদি দেখা যায়, যাঁরা এখন আক্রান্ত হচ্ছেন, তাঁদের বেশির ভাগই টিকা নেননি অথবা এক বা দুই ডোজ নিয়েছিলেন কিংবা বুস্টার ডোজ নেননি, তাহলে টিকা নেওয়ার প্রতি জোর দিতে হবে।
মানুষকে টিকা নিতে উৎসাহিত করতে হবে উল্লেখ করে অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ বলেন, আবার যদি দেখা যায়, বুস্টার নেওয়ার পরও মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন, সে ক্ষেত্রে ‘আইসোলেশন’ ও মাস্ক পরার ওপর বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। কারণ, বুস্টার নেওয়ার পরও কেউ আক্রান্ত হলে বুঝতে হবে করোনার বর্তমান ধরনের ক্ষেত্রে টিকা কার্যকর হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, এলাকাভিত্তিক বিশ্লেষণও করতে হবে। যদি দেখা যায়, ঢাকায় মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে, তবে ঢাকাকেন্দ্রিক গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি হবে। তবে দেশের অন্য অংশকেও গুরুত্ব দিতে হবে।
অধ্যাপক বে-নজির আহমেদ বলেন, বহির্বিশ্বে মানুষ এখন সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে অমিক্রনের একটি উপধরনে। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেশে ওই উপধরনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। বিশেষ করে, ভারতে অমিক্রনের ওই উপধরনে আক্রান্ত হওয়ার হার বেশি। দ্রুত বিশ্লেষণের মাধ্যমে কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে আগামী ঈদের (ঈদুল আজহা) সময় করোনা সংক্রমণের হার চার-পাঁচ গুণ বাড়তে পারে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: