রাজধানীর বনানী থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে হওয়া মামলায় চিত্রনায়িকা পরীমনির জামিন আবেদন নাকচ করে আরও এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
উভয় আবেদনের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আতিকুর রহমানের আদালত আজ আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১২টা এ আদেশ দেন।
আদেশের পর সিএমএম আদালতের আট তলা ভবন থেকে পরীমনিকে বের করা হয়। এর আগে থেকে নিচে গারদ থানার সামনে শত শত সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক পরীমনির জন্য অপেক্ষায় থাকেন।
ফলে ভিড়ে হাঁটার মতো পরিস্থিতিও ছিল না। এর মধ্যেই পরীমনিকে পুলিশ কঠোর নিরাপত্তা দিয়ে গারদ থানায় নেওয়ার জন্য রওনা দেয়। পুলিশ বেষ্টিত হয়ে হাঁটার সময় পরীমনি হুড়োহুড়িতে ধাক্কা খেয়ে পড়ে যান। এতে হাতে-পায়ে ব্যথা পান তিনি।
পরে নারী পুলিশেরা তাকে তুলে আবার গারদ থানায় প্রবেশ করান।
এর আগে আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকার সিএমএম আদালতে পরী মণিকে হাজির করা হয়। গতকাল পরীমনিকে ফের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
এর আগে গত শুক্রবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে পরীমনিকে সিএমএম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এর পর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক গোলাম মোস্তফা।
গত ৪ আগস্ট পরীমনিকে তার বনানীর বাসা থেকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। অভিযানে নতুন মাদক এলএসডি, মদ ও আইস উদ্ধার করা হয় বলে দাবি করে র্যাব। তার ড্রয়িংরুমের কাবার্ড, শোকেস, ডাইনিংরুম এবং বেডরুমের সাইড টেবিল ও টয়লেট থেকে বিপুল মদের বোতল উদ্ধার করা হয় বলেও দাবি করা হয়।
এর পর রাত ৮টা ১০ মিনিটে পরীমনিকে তার বাসা থেকে একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে র্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে গাড়িটি কুর্মিটোলায় র্যাব সদর দপ্তরে পৌঁছায়। সেখানে রাত ১২টা পর্যন্ত পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
পরদিন ৫ আগস্ট বিকাল ৫টা ১২ মিনিটে র্যাব সদর দপ্তর থেকে পরীমনি, প্রযোজক ও অভিনেতা মো. নজরুল ইসলাম রাজ ও তাদের দুই সহযোগীকে নিয়ে কালো একটি মাইক্রোবাসে করে বনানী থানায় রওনা দেয় র্যাবের একটি দল।
এর পর র্যাব বাদী হয়ে রাজধানীর বনানী থানায় পরীমণি ও তার সহযোগী দীপুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে৷ রাত ৮টা ২৪ মিনিটে পরীমনি ও তার সহযোগীকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়।
এর পর বনানী থানার মামলায় তাদের সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ সময় আসামিপক্ষে তাদের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর পর ১০ আগস্ট পরীমনি ও তার সহযোগী দীপুকে আদালতে হাজিরের পর ফের ৫ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
দুই দফায় রিমান্ড শেষে গত ১৩ আগস্ট পরীমনি ও তার সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদের জামিন আবেদন খারিজ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: