করোনায় পড়ালেখায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন ৭৫.৫% শিক্ষার্থী

সময় ট্রিবিউন | ১০ অক্টোবর ২০২১, ০৮:০৯

-ফাইল ছবি

দেশে অতিমারি করোনাভাইরাসের সময় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ৭৫ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পড়ালেখায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। এ ছাড়া এ সময়ে ৮৪ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগেছেন। এর মধ্যে ছাত্রদের ৮০ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং ছাত্রীদের ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ মানসিক সমস্যায় ভুগেছেন। তবে শহরের চেয়ে গ্রামে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের মানসিক বিপর্যয়ের হার ছিল বেশি।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর মহামারির প্রভাব নিয়ে ‘করোনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মানসিক বিপর্যয়: একটি প্রায়োগিক জরিপ’ শীর্ষক এক প্রতিবেদন শনিবার প্রকাশ করেছে আঁচল ফাউন্ডেশন। জরিপে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

গত ১২ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর দেশের ২ হাজার ৫৫২ জন বিশ্ববিদ্যালয়শিক্ষার্থী এ জরিপে অংশ নেন।

জরিপে দেখা যায়, মহামারির সময় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ৭৫ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পড়ালেখায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন, যা মোট শিক্ষার্থীর প্রায় তিন-চতুর্থাংশ। তবে সংকটের এ সময়ে ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী পড়াশোনার আগ্রহ অক্ষুণ্ন রেখেছেন, যা মোট শিক্ষার্থীর এক-চতুর্থাংশ। এ ছাড়া এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সশরীরে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় অনলাইনে বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম চালানো হয়। তবে অনলাইন শিক্ষা নিয়ে সন্তুষ্ট হওয়ার ব্যাপারে লাইকার্ট স্কেলে ১-৫ স্কোরের মধ্যে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ৫৩ দশমিক ৫ শতাংশ শিক্ষার্থী। এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩১ দশমিক ৯ শতাংশের অসন্তুষ্টির মাত্রা আবার অনেক বেশি।

জরিপে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, মহামারিতে অধিকাংশ শিক্ষার্থী মন খারাপ থাকা, ঠিকমতো ঘুম না হওয়া, নিজেকে তুচ্ছ ভাবা ইত্যাদি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। এ সময়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৮৪ দশমিক ৬ শতাংশ শিক্ষার্থী মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। এ ছাড়া পুরুষ শিক্ষার্থীর ৮০ দশমিক ৩৮ শতাংশ এবং নারী শিক্ষার্থীর ৮৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ এই মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। শহরের চেয়ে গ্রামে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের মানসিক বিপর্যয়ের হার তুলনামূলকভাবে বেশি ছিল।

জরিপের প্রতিবেদনে বলা হয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের তুলনায় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বেশি মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। এই সময়ে ৮৬ দশমিক ৮৪ শতাংশ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং ৮০ দশমিক ৬ শতাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন।

তবে শিক্ষার্থীদের এসব মানসিক স্বাস্থ্য সমাধানে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেওয়া, সবাইকে মানসিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনতে একটি জাতীয় হটলাইন সেবা চালুসহ আঁচল ফাউন্ডেশনের থেকে ছয়টি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


জনপ্রিয় খবর