প্রশাসনের সিন্ধান্তের অপেক্ষায় আছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সাড়ে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী। করোনা মহামারিতে ক্যাম্পাস ও পার্শবর্তী কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ এলাকার বিভিন্ন মেস ও বাসাবাড়িতে আটকা পড়ে এসব শিক্ষার্থী। প্রশাসন শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌছে দেয়ার জন্য পরিবহন দেবে কি না এ সিন্ধান্ত জানাবে রবিবার। ঈদের পরে কোর্স ফাইনাল পরীক্ষা হবে প্রশাসনের এমন সিন্ধান্তে আবাসন সংকটকের ভয়ে আগে থেকেই ক্যাম্পাস ও এর পার্শবর্তী এলাকায় অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা।
ক্যাম্পাস ও পার্শবর্তী এলাকা সূত্রে জানা যায়, মহামারি করোনায় মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে কুষ্টিয়া ও ঝিনাইদহ জেলা। গত ১লা জুলাই থেকে গণমাধ্যমে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী দুই জেলায় এ মারণঘাতি ভাইরাস কেড়ে নিয়েছে ১৮১ জনের প্রাণ।
এছাড়াও করোনায় বিশ্ববিদ্যালয় হারিয়েছে দুই শিক্ষক, এক কর্মকর্তা এক কর্মচারী এবং এক শিক্ষার্থীকে। কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহে এবং ক্যাম্পাস পার্শবর্তী এলাকায় প্রতিনিয়ত করোণা সংক্রমণ ও মৃত্যুহার বেড়েই চলছে। এসব এলাকায় চরম আতঙ্কে দিনাতিপাত করেছে শিক্ষার্থীরা। অনেকের মধ্যে করোনার উপসর্গও দেখা যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
ক্যাম্পাস ও কুষ্টিয়া শহরে আটকা পড়া একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, চারপাশে করোনা রোগী। প্রতিদিন মহামারিতে মানুষ মারা যাচ্ছে। আমরা চরম ভয়ের মধ্যে আছি। ঈদের পরে চূড়ান্ত পরীক্ষা হবে। এরকম সিন্ধান্ত জেনে আমরা আগে থেকেই মেসে থাকা শুরু করেছিলাম। কেননা, হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নিলে মেসে থাকা নিয়ে বিপদে পড়তে হয়।’
গত ১৯ জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২০তম একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় পবিত্র ঈদুল আযহার পরে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের স্থগিত পরীক্ষা গ্রহনের সিন্ধান্ত গ্রহন করে কর্তৃপক্ষ। হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা গ্রহনের সিন্ধান্তে আবাসন সংকটের ভয়ে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ এবং ক্যাম্পাস পার্শবর্তী মেস ও বাসাবাড়িতে ঈদের আগেই অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। দেশে করোনা সংক্রমণ মারাত্মক হারে বৃদ্ধি পায় এবং মৃত্যুহার রের্কড গড়লে ১লা জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। ফলে গণপরিবহন বন্ধ হয়ে যায়। এতে চরম বিপদে পড়ে শিক্ষার্থীরা।
গত ৭ জুলাই শাখা ছাত্রমৈত্রী আটকা পড়া শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসের নিজস্ব বাসে করে বাড়ি পৌছে দেয়ার দাবি জানায় কর্তৃপক্ষের কাছে। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আটকাপড়া শিক্ষার্থীদের অনলাইনে তথ্য সংগ্রহ শুরু করে প্রশাসন। সোমবার (১২ জুলাই) বেলা ১১টায় তথ্য গ্রহন শেষ হবে। শিক্ষার্থীদের বাড়ি যাওয়ার ক্ষেত্রে ক্যাম্পাসের নিজস্ব পরিবহন দেয়া হবে কি না প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে সিন্ধান্ত গ্রহন করবে প্রশাসন। এ সিন্ধান্তের অপেক্ষায় আছে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের নিজস্ব পরিবহনে করে বাড়ি পৌছে দেবার বিষয়ে কি সিন্ধান্ত আসতে পারে এ বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘রবিবার ১১টায় শিক্ষার্থীদের অনলাইনে তথ্য গ্রহন শেষ হবে। এ তথ্য নিয়ে মিটিং হবে। সেখানেই সিন্ধান্ত হবে তাদের বিষয়ে কি করা হবে। তবে, বিষয়টি আন্তরিকতার সাথে দেখা হচ্ছে।’
প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সংখ্যার উপর সিন্ধান্ত নেয়া হবে কি করা যায়। তবে, বিষয়টি মানবিকভাবে দেখা হচ্ছে।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: