মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে গত বছরের ১৮ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। আটকে আছে বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষাসহ আসন্ন ভর্তি পরীক্ষাও। করোনা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে গেলে আগামী মাসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়ছেন শিক্ষামন্ত্রী।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সব বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো গত বছরের ১৮ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বন্ধ রয়েছে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)। শিক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি এখনো আটকে আছে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদকের জন্য মনোনীত ২০১৯ সালের শিক্ষার্থীদের নামের তালিকা।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-ইউজিসির রিসার্চ সাপোর্ট এন্ড পাবলিকেশন ডিভিশনের পরিচালক মো: কামাল হোসেন জানিয়েছেন ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রতিটি অনুষদ থেকে সেরা ফলাফলকারীদের নামের তালিকা ইউজিসিতে পাঠানো হয়েছে।
হাবিপ্রবির ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ফলাফল বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় আট অনুষদে থেকে নয় জন শিক্ষার্থী শীর্ষস্থান দখল করেছে।
ডিন অফিস সূত্রে জানা গেছে, সিএসই অনুষদ থেকে সর্বোচ্চ সিজিপিএ অর্জন করেছেন ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মতিউর রহমান তারেক ও রিয়াজ আহমেদ (সিজিপিএ-৩.৮৩)। তবে মাধ্যমিক ও উচ্চ-মাধ্যমিক পর্যায়ে উক্ত শিক্ষার্থীদের ফলাফলের তারতম্য থাকায় প্রধানমন্ত্রী পদকের জন্য এগিয়ে আছেন রিয়াজ আহমেদ।
বিজনেস স্টাডিজ অনুষদ থেকে সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জন করেছেন ফিনান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী নুসরাত আফরিন (সিজিপিএ-৩.৯২)। নুসরাতের ইচ্ছা তিনি ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করবেন।
ভেটেরিনারি এন্ড এনিমেল সায়েন্স অনুষদ থেকে সর্বোচ্চ সিজিপিএ অর্জন করেছেন জাকিউল হাসান জিহাদ (সিজিপিএ- ৩.৯০)। তিনি ভবিষ্যতে গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে চান বলে আশা ব্যক্ত করেছেন।
মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ থেকে সর্বোচ্চ সিজিপিএ অর্জন করেছেন ফারজানা খানম (সিজিপিএ- ৩.৯৬)। বর্তমানে তিনি মাস্টার্স ইন ফিসারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিকস বিভাগে অধ্যয়নরত। তিনিও শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হতে চান তিনি।
এদিকে সোস্যাল সায়েন্স এ্যান্ড হিউম্যানিটিস অনুষদ থেকে সর্বোচ্চ সিজিপিএ অর্জন করেন অর্থনীতি বিভাগের ছাত্র বাবর আহমদ (সিজিপিএ - ৩.৭৮)। ভালো ফল থাকায় সবার মতো ভবিষ্যতে তিনিও শিক্ষকতার পাশাপাশি গবেষণার মাধ্যমে অর্থনীতি নিয়ে কাজ করতে চান।
কৃষি অনুষদ থেকে সর্বোচ্চ সিজিপিএ অর্জন করার রেকর্ড গড়েছেন মোছা: অনন্যা খাতুন (সিজিপিএ- ৩.৯৬)। বর্তমানে তিনি উদ্যানতত্ত্ব বিভাগে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত। ভবিষ্যতে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার পাশাপাশি গবেষণা কাজ করতে চান।
ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদ থেকে সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জন করেছেন সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগেরশিক্ষার্থী আফরোজা সুলতানা (সিজিপিএ - ৩.৯১)। বর্তমানে তিনি রাজধানীর সিটি ইউনিভার্সিটিতে কর্মরত। তার স্বপ্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতা করার।
বিজ্ঞান অনুষদ থেকে প্রথমবার সর্বোচ্চ রেজাল্ট অর্জনের রেকর্ড গড়েন গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী রিসাত হোসাইন (সিজিপিএ-৩.৯৯)। তিনিও শিক্ষকতা পেশায় আগ্রহী।
এদিকে শিক্ষার্থীদের এমন ফলাফলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও গর্বিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ডা. ফজলুল হক বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সাফল্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন খুবই খুশি। আমরা তাদের সাফল্য কামনা করি যেন তাঁরা এ ফলাফল আগামীতেও ধরে রাখে।’
ইউজিসির রিসার্চ সাপোর্ট এন্ড পাবলিকেশন ডিভিশনের পরিচালক মো: কামাল হোসেন বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার স্বাভাবিকভাবে সকল কাজে সময় বেশি লাগছে। আমরা প্রধানমন্ত্রী পদকের জন্য প্রায় অধিকাংশ কাজ শেষ করেছি। করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে আসলে আমরা অনুষ্ঠনটি আয়োজন করতে পারবো বলে আশা করছি’।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: