দেশে-বিদেশে লাফিয়ে লাফিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে স্বর্ণের দাম। ইতোমধ্যে বিশ্ববাজারে নিরাপদ আশ্রয় ধাতুটির দর সর্বকালের সর্বোচ্চ স্তরে উঠেছে। প্রতি আউন্সের মূল্য স্থির হয়েছে ২১০০ ডলারে।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) বিশ্বের প্রভাবশালী বাণিজ্যিক সংবাদমাধ্যম ইয়াহু ফিন্যান্সের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
এরই মধ্যে দেশের বাজারেও হু হু করে বাড়ছে স্বর্ণের দাম। ইতোমধ্যে ইতিহাসে রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছে গুরুত্বপূর্ণ ধাতুটির দর। ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরির মূল্য নিষ্পত্তি হয়েছে ১ লাখ ৯ হাজার ৮৭৫ টাকায়। স্থানীয় মার্কেটে এত দাম আগে কখনও ছিল না।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) জানিয়েছে, দেশের বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা বা খাঁটি স্বর্ণ) দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্যবান ধাতুটির দর ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।স্থানীয় মার্কেটেও যার ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। ফলে মূল্য বাড়ছে।
এদিকে ইয়াহুর প্রতিবেদনে বলা হয়, শিগগিরই কঠোর মুদ্রানীতি গ্রহণ থেকে সরে আসতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ (ফেড)। ২০২৪ সালে সুদের হার কমাতে পারে তারা। গত শুক্রবার আটলান্টার স্পেলম্যান কলেজে বক্তৃতাকালে ফেড চেয়ার জেরোম পাওয়েল এই আভাস দেন। এমনটি হলে মার্কিন মুদ্রা ডলার এবং ট্রেজারি ইল্ড নিম্নমুখী হবে। ফলে স্বর্ণের দরে উত্থান ঘটবে।
এরপরই বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে স্বর্ণ। নেপথ্যে আরেকটি কারণ রয়েছে। শিগগিরই বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট দূর হওয়ার সম্ভাবনা নেই। পাশাপাশি ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা প্রশমিত হওয়ার আশাও ক্ষীণ। সাধারণত, এমন সময়ে আবেদন ফিরে পায় স্বর্ণ। ইতোমধ্যে যে ইঙ্গিত মিলেছে।
ক্রেতাদের উদ্দেশে লেখা এক নোটে ব্লিকলে ফিন্যান্সিয়াল গ্রুপের প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা পিটার বুকভার বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে ‘বুনো’ গতিতে স্বর্ণের দাম বাড়ছে। যদিও তা বিগত ২ বছর ধরেই ঊর্ধ্বগামী হচ্ছে। সবমিলিয়ে চলতি বছর ১৪ শতাংশ বেড়েছে স্বর্ণের দর।
রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে কাজ করে স্বর্ণ। মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই করে এটি। রাশিয়া-ইউক্রেন এবং ফিলিস্তিনি-ইসরায়েল যুদ্ধে বিশ্বজুড়ে ভূ-রাজনীতিতে সংকট দেখা দিয়েছে। পাশপাশি অর্থনৈতিক মন্দার শঙ্কাও আছে। ফলে ব্যবসায়ীদের কাছে গুরুত্ববহ হয়ে উঠেছে স্বর্ণ।
ইতোমধ্যে বিশ্বজুড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো স্বর্ণের মজুত বাড়াতে আগের যেকোনোও সময়ের বেশি। বিশ্বের বৃহৎ অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্র, চীন, ভারত, সৌদি আরব, ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ দুঃসময়ের বন্ধু ধাতটির দিকে ছুটছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: