আগামীকাল থেকে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু করছে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড। সিরিজের প্রথম ম্যাচেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে প্রথম জয়ের সেরা সুযোগ হিসেবে দেখছে আত্মবিশ্বাসী টাইগাররা। মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় শুরু হবে ম্যাচটি। সরাসরি দেখাবে গাজী টিভি ও টি-স্পোটর্স।
এখন পর্যন্ত টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ১০ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড। সবগুলোই হেরেছে টাইগাররা। এরমধ্যে ঘরের মাঠে ২০০৩ সালের একমাত্র ম্যাচের সিরিজের হারও আছে। তবে ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ভালো পারফরমেন্স রয়েছে টাইগারদের।
ঘরের মাঠে ওয়ানডে ফরম্যাটে ২০১০ সালে চার ম্যাচের সিরিজ ও ২০১৩ সালে তিন ম্যাচের সিরিজে নিউজিল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করেছিল বাংলাদেশ। ওয়ানডের মতো ফল, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও করার সুযোগ এখন বাংলাদেশের সামনে। ২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরে নিউজিল্যান্ড।
২০১৩ সালের পর কিউইদের প্রথম বাংলাদেশ সফর হলেও এরমধ্যেই তিনবার নিউজিল্যান্ড সফর করেছে টাইগাররা। মূলত সীমিত ওভারের সিরিজই খেলেছে তারা। এ বছর তিনটি করে ওয়ানডে ও তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে দুই দল। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আধিপত্য বিস্তার করতে পেরেছ বাংলাদেশ। তবে নিজেদের ডেরায় এখনো অপরাজিত নিউজিল্যান্ড।
সদ্য জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৪-১ ব্যবধানে জয় পায় বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রথম দ্বিপাক্ষীক সিরিজে এটাই ছিল বাংলাদেশের প্রথম জয়ের স্বাদ। সঙ্গত কারণেই নিজেদের সর্বশেষ দুই সিরিজ জয়ের কাররেণ বাংলাদেশ দলের আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে। এই দুই সিরিজের ফল ইঙ্গিত দিচ্ছে, এই ফরম্যাটে দুর্বল থেকে ভালো দল হবার পথে বাংলাদেশ।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১০৭টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। জয় ৩৮টি ম্যাচে। ৬৭টি ম্যাচে হেরেছে তারা। আর দু’টি ম্যাচের ফল হয়নি।
মন্থর, নিচু ও বিশ্বের যেকোনো দেশের চেয়ে ভিন্ন কন্ডিশনেরও পর ফেভারিট বাংলাদেশ। যা এ মাসের শুরুর দিকে বুঝতে পেরেছে নিউজিল্যান্ডের প্রতিবেশী দেশ অস্ট্রেলিয়া। এবার নিউজিল্যান্ডের পালা।
মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস দলে ফেরায়, উজ্জীবিত হয়েছে বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের মতো উইকেট কঠিন হলেও তাদের উপস্থিতি দলের ব্যাটিং লাইন-আপকে আলাদাভাবে সাহস যোগাবে।
বাংলাদেশ সফরে থাকা নিউজিল্যান্ডের কোনো খেলোয়াড় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলে সুযোগ পায়নি। দলের শীর্ষ তারকাদের বিশ্রাম দেয়ার সিদ্বান্ত নিয়েছে নিউজিল্যান্ড টিম ম্যানেজমেন্ট। এমনকি শীর্ষ তারকারা নিউজিল্যান্ড দলে থাকলেও অস্ট্রেলিয়া সিরিজের মতো পিচ হলে অবশ্যই কঠিন সময়ের সম্মুখীন হতে হতো। তবে এই ধরনের উইকেট বাংলাদেশকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে পিছিয়ে দিবে বলে দেশের ক্রিকেটপ্রেমি ও বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে সমালোচনা শুনতে হয়েছে।
অবশ্য নিউজিল্যান্ড সিরিজের জন্য বাংলাদেশ ভালো উইকেট চাইলেও আবহাওয়ার কারণে সেটি প্রায় অসম্ভব।
বাংলাদেশের প্রধান কোচ রাসেল ডোমিঙ্গো বলেন, ‘আমি ভালো উইকেটের আশায় আছি। বছরের এই সময় আর্দ্রতা এবং বৃষ্টি থাকলেও, খুব বেশি রোদ নেই। বছরের বিভিন্ন সময়ে এ ধরনের কন্ডিশন পাওয়া কঠিন হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ব্যাটিং লাইন-আপ এবং ভালো উইকেটে ব্যাটিংয়ের আত্মবিশ্বাসের গুরুত্ব জানি। আমরা জয় এবং আত্মবিশ্বাস অর্জনের গুরুত্বও বুঝতে পারি। আমি একটি ভালো, স্বাভাবিক মিরপুর উইকেট ধরে নিচ্ছি, যেখানে ১৫০-১৬০ একটি ভালো স্কোর।’
ডোমিঙ্গো পরিষ্কার করেছে, প্রতিপক্ষ যেই হোক না কেন, সিরিজ জয়ই প্রাধান্য পাবে। তিনি বলেন, ‘যে কোনো সিরিজ জয়ই বড়। আমি মনে করি ৫০ ওভারের ফরম্যাটে শ্রীলংকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয় ছিল দুর্দান্ত অর্জন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ফরম্যাটেই জয় ছিল। আমি একটির তুলনায় আরেক সিরিজকে এগিয়ে রাখাটা পছন্দ করি না। প্রতিটি সিরিজ জয় দলের জন্য বিশেষ।’
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যবহৃত উইকেট নিয়ে অস্বস্তি গোপন করেননি নিউজিল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত কোচ গ্লেন পকনাল। যদিও এখানে আরও ভালো করার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী তিনি। একই সাথে এটাও স্পষ্ট করেন যে, কিছু গতি এবং বাউন্স দলের জন্য সহায়ক হতে পারে।
পকনাল বলেন, ‘এটা খুব কঠিন। আমরা মনে করি, তারা কীভাবে খেলবে সেটি ধারণা নেয়া এবং সদ্য শেষ হওয়া অস্ট্রেলিয়া সিরিজের উপর ভিত্তি করে খেলবে, কিন্তু ইতিহাস বলছে, তারা ভিন্নভাবে খেলেছে। সব দিক দিয়ে প্রস্তুতি নিয়ে, আমাদের সজাগ থাকতে হবে। আমরা সম্ভবত অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের মতো ধীর এবং নিচু উইকেটের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। তবে আমরা এতে অভ্যস্ত নই। তবে যদি এটির গতি এবং বাউন্স একটু বেশি থাকে, আমরা এতে বেশ খুশি হব।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: