বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে ঢাকাবাসীর আত্মার সম্পর্ক ছিল বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।
তিনি বলেন, দলের জন্য রাজপথে আছি। এখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের হত্যাকাণ্ডে জড়িত জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় দ্রুত কার্যকর চাই। বৃহস্পতিবার (১২ আগস্ট) রাজধানীর হাইকোর্টের (কদম ফোয়ারা) মোড়ে এক মানববন্ধনে এ কথা বলেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের হত্যাকাণ্ডে জড়িত জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় দ্রুত কার্যকরের দাবিতে এক মানববন্ধনের আয়োজন করে অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রয়াত মেয়র মোহাম্মদ হানিফের স্মৃতিবিজড়িত সংগঠন মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন। মানববন্ধনে পুরান ঢাকার হাজারো মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত থেকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাঈদ খোকন বলেন, ঢাকার অগণিত সরদার এবং তাদের পরিবার, মুরব্বিরা বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে এই শহরে স্বাধীনতা সংগ্রামের সূচনা করেছিলেন। দল মত নির্বিশেষে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে ছিলেন। বুকের তাজা রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন। বঙ্গবন্ধু যে কর্মসূচি দিয়েছিলেন, পুরান ঢাকার মানুষ নিজের জীবন দিয়ে সে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছেন। তাই বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ঢাকাবাসীর এই সম্পর্ক কখনো কখনো রক্তের সম্পর্কের চেয়ে বেশি।
তিনি বলেন, পুরান ঢাকাবাসীর সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মার সম্পর্ক ছিল। জীবনের কঠিনতম সময়ে বাংলার স্বাধীনতার লক্ষ্য নিয়ে তিনি পুরান ঢাকায় এসেছিলেন। এই এলাকার মানুষ দুই হাত উজাড় করে বঙ্গবন্ধুকে সাদরে গ্রহণ করেছিলেন।
১৯৫৪ সালে বঙ্গবন্ধু গ্রেফতারের পর তাঁর পরিবার ৭৯ নং নাজিরা বাজারে মেয়র মোহাম্মদ হানিফের বাস ভবনে উঠেছিলেন জানিয়ে সাঈদ খোকন বলেন, 'আমার দাদি বঙ্গবন্ধু পরিবারকে দেখবাল করেছেন। আমার নানা মাজেদ সরদার (ঢাকার শেষ সরদার) বঙ্গবন্ধুকে অনেক শ্রদ্ধা করতেন। আমার চাচা মোহাম্মদ সুলতান ছয়দফা আন্দোলনে গ্রেফতার হয়ে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দীর্ঘদিন কারাবরণ করেছেন। এখন আমি মাজেদ সরদারের তৃতীয় প্রজন্ম। আমরা তার ধারাবাহিকতা অক্ষুন্ন রাখতে চাই। ঢাকাবাসী প্রয়োজনে বুকের রক্ত দিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আস্থা জানাবে। ঢাকাবাসী কোনো দুর্যোগে বঙ্গবন্ধু বা তার পরিবারকে ফেলে যায়নি। আগামীতেও ছেড়ে যাবে না (ইনশাআল্লাহ)।
ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রয়াত মেয়র মোহাম্মদ হানিফ বঙ্গবন্ধুর এবং দলের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছেন জানিয়ে সাঈদ খোকন বলেন, আমার বাবা মোহাম্মদ হানিফ টানা ৫ বার ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন। আমিও মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছি। দলের জন্য রাজপথে আছি। এখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের হত্যাকাণ্ডে জড়িত জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের রায় দ্রুত কার্যকর চাই।
মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা মোহা. হাবিবুল ইসলাম সুমনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান ওমর আলীর সভাপতিত্বে আওয়ামীলীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর উদ্দিন মন্টু, ফজলুর রহমান ফজলু, ফাউন্ডেশনের অন্যতম সমন্বয়কারী মোহাম্মদ সাদেক মিঠু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
মানববন্ধন শেষে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের নেতৃত্বে একটি মৌন মিছিল হাইকোট (কদম ফোয়ারা) মোড় হতে প্রেস ক্লাব, শিক্ষা ভবন হয়ে পুরাতন ঢাকায় বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: