সাবেক অ্যার্টনি জেনারেল ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের বিরুদ্ধে গর্ভপাত, নারী নির্যাতন ও নাতনীকে জোরপূর্বক কানাডা পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে পুত্রবধূ মাধবী আক্তার নীলা।
শুক্রবার (১৬ জুলাই) মিরপুরের আরামবাগে নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন নীলা।
সংবাদ সম্মেলনে মাধবী আক্তার নীলা বলেন, সাবেক অ্যার্টনি জেনারেলের পুত্র মোয়াজ আরিফের সঙ্গে ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ পারিবারিকভাবে আমার বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী-সন্তান নিয়ে আমি সুখেই ছিলাম। বর্তমানে আমার বড় মেয়ের বয়স দুই বছর। সুখের সংসারে সমস্যা শুরু হয় আমার বড় সন্তানকে নিয়ে। আমার শ্বশুর ও শাশুড়ি আমার বড় মেয়েকে কানাডায় তাদের মেয়ের কাছে পাঠিয়ে দিতে চাচ্ছে। আমার ননদের কোনো সন্তান না থাকায় তারা আমার সন্তানকে কানাডা পাঠিয়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু আমি রাজি হইনি। এরপর থেকেই আমার ওপর অত্যাচার ও নির্যাতন শুরু হয়।
নীলা বলেন, আমি দুই সন্তানের জননী। তবে এর আগে গত বছর অন্তঃসত্ত্বা থাকা অবস্থায় আমার স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি নির্যাতনের এক পর্যায়ে আমার পেটে লাথি মেরে বাচ্চা নষ্ট করে ফেলেন। পরবর্তী সময়ে আমি ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে আমাকে হাসপাতালে ভর্তিতে সহায়তা করে। ঐ সময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার ডিএনসি করেন।
তিনি অভিযোগ করেন, অত্যাচার-নির্যাতনের মধ্যেই আমি আবার তৃতীয়বারের মতো অর্থাৎ গত বছরের অক্টোবরে অন্তঃসত্ত্বা হই। তৃতীয়বারের মতো আমার অন্তঃসত্ত্বার খবর আমার স্বামী ও শ্বশুর-শাশুড়ি জানার পরই গর্ভপাত করতে চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু আমি কোনোভাবেই তাদের চাপের কাছে নতি স্বীকার করিনি। এক পর্যায়ে তারা আমাকে বাসার ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করতে জোর করে। কিন্তু আমি রাজি না হওয়ায় শ্বশুর-শাশুড়ির নির্দেশে আমাকে সেদিন অমানবিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন স্বামী মোয়াজ আরিফ। নির্যাতনের সময় আমি ৩৫ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা ছিলাম।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও অভিযোগ করেন, এ এফ হাসান আরিফ সাবেক অ্যার্টনি জেনারেল হওয়ায় আইনের অপব্যবহার করে নয় মাস অন্তঃসত্ত্বা থাকাবস্থায় আমাকে মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়ে দেন। আমার আইনজীবী জামিনের জন্য বার বার আবেদন করেও ব্যর্থ হয়েছেন। সবশেষ কারাগারে থাকা অবস্থায় গত মাসের জুনের প্রথম সপ্তাহে পুলিশি হেফাজতে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আমার দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম হয়। পর দিন জামিনের জন্য আবেদন করলে আদালত জামিন মঞ্জুর করেন। তারপর হাসপাতাল থেকেই আমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এক প্রশ্নের জবাবে মাধবী আক্তার নীলা বলেন, বর্তমানে আমার দুই বছরের সন্তানকে জোর করে আমার কাছ থেকে আলাদা রেখেছেন তারা। আমি বার বার আমার সন্তানের সাথে দেখা করতে গিয়েও পারিনি। আমার দাবি, সন্তান এখনও অনেক ছোট। যখন ও বুঝতে পারবে তখন তাকে নিয়ে যাক। এখন তো কথাও বলতে পারে না। আমি আমার সন্তানকে ফিরে পেতে চাই। এছাড়া শ্বশুর-শাশুড়ির নির্যাতন থেকে মুক্তি চেয়ে স্বামী-সন্তানের সুখের সংসার ফিরে পেতে প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য চাইছি।
এ প্রসঙ্গে জানতে সাবেক অ্যার্টনি জেনারেল ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: