র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক অতিরিক্ত আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেছেন, আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না, সব সময় সতর্ক আছি। সমন্বিতভাবে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক ও আস্তানা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছি।
শুক্রবার (১ জুলাই) গুলশানের হলি আর্টিসান হামলার ছয় বছর উপলক্ষে ‘দীপ্ত শপথ’ ভাস্কর্যে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
র্যাব মহাপরিচালক বলেন, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশ ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছে। আমরা জঙ্গিবাদ দমনের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছি। সাইবার জগতে আমরা জঙ্গি কার্যক্রমের বিষয়ে নজরদারি রাখছি। জঙ্গিবাদ দমনে সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছে র্যাব। যে কারণে জঙ্গিবাদ এখন সক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারছে না। তারপরও আমরা আত্মতুষ্টিতে ভুগছি না, সবসময় সতর্ক আছি।
জঙ্গিদের ডি-রেডিক্যালাইজেশনের কাজ করছে উল্লেখ করে র্যাব ডিজি বলেন, আমরা এরইমধ্যে ১৬ জঙ্গিকে ডি-রেডিক্যালাইজেশন করেছি। ১৬ জঙ্গিকে আত্মসমর্পণ করিয়েছি। তাদের সঙ্গে আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছি, যেন তারা নতুন করে জঙ্গিবাদে না জড়ায়। আমরা এ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি। আমরা তাদের ভালো পথে শান্তির পথে আসতে উদ্বুদ্ধ করছি।
তিনি বলেন, হলি আর্টিসান হামলায় তৎকালীন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) রবিউল ও বনানী থানার ওসি সালাহউদ্দীন নিহত হন। তাদের স্মরণে গুলশান মডেল থানার সামনে ‘দীপ্ত শপথ’ নামের এ দুই অফিসারের ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়। প্রতি বছর হলি আর্টিসান হামলার দিন এ ভাস্কর্যে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় তাদের স্মরণে।
চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আজ থেকে ৬ বছর আগে ২০১৬ সালের ১ জুলাই হলি আর্টিসানে যে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে এতে ৩ বাংলাদেশিসহ ২০ জন নিহত হন। যারা মারা গেছেন আমরা তাদের রুহের মাগফেরাত কামনা ও আত্মার শান্তি কামনা করছি। ওই সময় দুই পুলিশ অফিসার বীরত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রাণ হারান।
তিনি বলেন, র্যাব সব সময় জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনে দৃঢ়ভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছে। র্যাবের গোয়েন্দা শাখার প্রধান কর্নেল আজাদ সিলেটে জঙ্গিবাদবিরোধী অভিযানে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে নিহত হন। আমরা তার রুহের শান্তি কামনা করছি। তার পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি।
তিনি আরও বলেন, হলি আর্টিসান হামলার পর পরই ১২ ঘণ্টার মধ্যে আমরা ওই এলাকার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিই। অভিযান পরিচালনা করার মতো একটি পরিবেশ সৃষ্টি করি। হলি আর্টিসানের ঘটনা সেদিন জঙ্গিরা অনলাইনে লাইভ করেছিল। তাদেরও আমরা চিহ্নিত করি ও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি।
র্যাব এ পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে উল্লেখ করে র্যাব মহাপরিচালক বলেন, র্যাব আজ পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার জঙ্গি গ্রেফতার করেছে। হলি আর্টিসানের পর আমরা ১ হাজার ৬০০’র বেশি জঙ্গি গ্রেফতার করেছি। গ্রেফতার জঙ্গিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- মূল পরিকল্পনাকারী আমির সারোয়ার জাহান, অর্থায়ন ও পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত শরিফুল ইসলাম খালেক ও মামনুর রশিদ রিপন।
তিনি বলেন, সরকার ঘোষিত জঙ্গিদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির অংশ হিসেবে আমরা সমন্বিতভাবে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক ও আস্তানা ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: