রংপুরের পীরগঞ্জে ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে ফেসবুকে উসকানিমূলক পোস্ট। ঘটনার ৪০ দিন আগে ফেসবুকে পবিত্র কাবা শরিফ নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন পরিতোষ সরকার। সেই মন্তব্য নিয়ে মাঝিপাড়া এলাকার পরিতোষের সঙ্গে ফেসবুকে তর্কবিতর্ক হয় উজ্জ্বল হাসান নামে আরেক তরুণের।
পরিতোষের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে তার আপত্তিকর মন্তব্যের স্ক্রিনশট নিয়ে বিভিন্নজনকে পাঠান উজ্জ্বল। এভাবেই ধর্ম অবমাননার অভিযোগ একজন থেকে আরেকজনের কানে পৌঁছে যায়। এতে তৈরি হয় বহু সংগঠিত হতে থাকে। দিনের পর দিন বিষয়টি বেশি ছড়িয়ে পড়লে বাড়তে থাকে ক্ষোভ।
তীব্র ক্ষোভের থেকে তৈরি হয় সংঘর্ষ। দুর্গোৎসবের সময়ে কুমিল্লা, চাঁদপুর, উলিপুরসহ বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া ঘটনা উগ্রবাদীদের মাঝে প্রভাব ফেলে। তারা পরিতোষ সরকারের ফেসবুকে ধর্ম নিয়ে উসকানিমূলক মন্তব্যের জেরে উত্তেজিত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে ১৭ অক্টোবর রাতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের মতো সহিংস ঘটনার সৃষ্টি হয়। ও উত্তেজনা সৃষ্টির প্রেক্ষাপট তৈরি করতে পরিতোষ সরকারের পাশাপাশি উজ্জ্বল হাসানসহ অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের অপব্যবহার করেছেন।
বুধবার (২০ অক্টোবর) গণমাধ্যমকে পরিতোষ সরকার ও উজ্জ্বল হাসানের নেপথ্যের এ বিষয়টি জানান পীরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরেস চন্দ্র। এদিকে হামলার ওই ঘটনায় উজ্জ্বল হাসান (২১) ও আল আমিন (২২) নামের দুই তরুণ গ্রেফতার হয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ বাড়াতে ফেসবুকে পোস্ট করে হিন্দুপল্লিতে হামলার আগে উগ্রবাদীদের উত্তেজিত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই দুজনের বিরুদ্ধে নতুন করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা করেছে পুলিশ। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা ছাড়াও তারা দুজন হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পৃথক মামলারও আসামি।
এ সম্পর্কে পীরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরেস চন্দ্র বলেন, হামলার ঘটনায় ওই দুজনকে মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) রাতে দিনাজপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক নতুন একটি মামলা হয়েছে। থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাদ্দাম হোসেন নতুন এই মামলার বাদী। এ ছাড়া বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটের মামলায় আরও ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: