রাজধানী কূটনৈতিক পাড়ায় পেট্রোল বোমা নিয়ে হামলা চালানোর ঘটনায় দেলোয়ার নামের এক জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করেছে কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট- সিটিটিসি।
গ্রেপ্তারের পর দেলোয়ারকে নিয়ে তার গ্রামের বাড়িতেও অভিযান চালায় পুলিশ। তার বাসা থেকে একাধিক ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ও কিছু নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দেলোয়ার জানিয়েছে সে আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য।
বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর পৌনে একটার দিকে এই ঘটনা ঘটে।
আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ- এআইইউবি’র একটি গাড়িতে হামলার পর ওই জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের পর শুক্রবার আদালতে সোপর্দ করে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা ৪৫ মিনিটে অজ্ঞাত এক ব্যক্তি গুলশানের থাইল্যান্ড অ্যাম্বেসি সংলগ্ন সড়কে একটি মাইক্রোবাসে হামলা চালায়। ওই মাইক্রোবাসটি (ঢাকা মেট্রো চ-৫৬-৫৪২৪) ছিল আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ- এআইইউবি’র। গাড়িতে সেসময় এআইইউবির সিনিয়র এক্সিকিউটিভ নজরুল ইসলাম ও জুনিয়র এক্সিকিউটিভ নাজমুল হাসান ছিলেন। সামান্য আহত হলেও তাৎক্ষণিক তারা স্থানীয় পথচারীদের সহায়তায় সেই জঙ্গিকে আটক করেন। পরে গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক নুরুজ্জামান তাকে হেফাজতে নিয়ে তার ব্যাগ তল্লাশি করে। পুলিশ তার ব্যাগ থেকে তাৎক্ষণিক দেড় লিটার তরল পদার্থ, দুইটি লোহার তৈরি ছুরি ও জাপানি নাগরিকত্বের একটি কার্ড উদ্ধার করে।
গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক নুরুজ্জামান বলেন, গাড়িতে পেট্রোলসহ একটি বোতল ঢিল মেরেছিল। পরে গাড়িতে থাকা লোকজনই তাকে আটক করে। খবর পেয়ে আমি সেখানে যাই। পুরো বিষয়টি এখন কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট হ্যান্ডেল করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেলোয়ারের বাড়ি মানিকগঞ্জের সিংগাইর থানাধীন জার্মিত্তা এলাকায়। তার বাবার নাম শাহাজুদ্দিন। সে দীর্ঘ দিন জাপানে ছিল। বছর খানেক আগে সে দেশে ফিরে এসে মানিকগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছিল। আটকের পর দেলোয়ারকে গিয়ে তার গ্রামের বাড়িতেও অভিযান চালায় পুলিশ। তার বাসা থেকে একাধিক ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ও কিছু নথিপত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
সূত্র আরও জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দেলোয়ার জানিয়েছে সে আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য। অনলাইনে বিভিন্ন অডিও-ভিডিও দেখে এবং শুনে সে জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল। পরে সাংগঠনিক সিদ্ধান্তে সে একজন বিদেশি নাগরিকের ওপর হামলার জন্য গুলশানের কূটনৈতিক এলাকায় গিয়েছিল। তার টার্গেট ছিল মার্কিন নাগরিক। এজন্য এআইউবির গাড়ি দেখে এটাকে আমেরিকান গাড়ি দেখে সে পেট্রোল বোমা হামলা চালিয়েছিল।
এঘটনার পর দেলোয়ারের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় সন্ত্রাস বিরোধী আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার বাদি হয়েছেন কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের এসআই আমির হোসেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: