খুলনা নগরের দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশায় নিখোঁজ মরিয়ম মান্নার মা রহিমা বেগমকে (৫৫) উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দীর্ঘ ২৯ দিন পর শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ১১টার দিকে রহিমাকে ফরিদপুর থেকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
মাকে ফিরে পাওয়ার পর বেশ কয়েকটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন মেয়ে মরিয়ম মান্নান। যেখানে তিনি উচ্ছ্বাস প্রকাশের পাশাপাশি সরকারকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন যারা এতদিন তার পাশে থেকে সাহস যুগিয়েছেন। কিন্তু সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে তার ভিন্ন চিত্র। মাকে এতদিন পর ফিরে পাওয়ায় যেখানে সবাই সাধুবাদ জানানোর কথা, সেখানে তার পেজে দেয়া স্ট্যাটাসগুলোতে হাসির প্রতিক্রিয়ার ছড়াছড়ি। এমনকি মন্তব্যের ঘরেও চলছে তীব্র সমালোচনা। এছাড়া অনেকেই যারা মরিয়মের দুঃসময়ে তার পাশে থেকে সহানুভূতি জানিয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন তারাও তার ব্যাপক সমালোচনা করছেন।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের শিক্ষার্থী কানিজ ফাতেমা শান্তা তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে পুরো বিষয়টির সমালোচনা করেছেন। বিষয়টিকে তিনি ওয়েব সিরিজের সঙ্গে তুলনা করে লিখেছেন, ‘সাবস্ক্রিপশন ছাড়াই একটা থ্রিলার ওয়েব সিরিজ দেখে ফেললাম। আপনার এহেন কাজ হাজার হাজার অভিযোগ সন্দেহের চোখে হাল্কা হয়ে যাবে। অভিনন্দন আপনাকে এতো সুন্দর অভিনয় করার জন্য। এখন আমার প্রশ্ন আপনার মা আসলেই এতদিন কোথায় ছিলেন? এতদিনের আত্নগোপনের এতো নিরাপদ জায়গা কোথায়?’
রুয়েল মাহমুদ নামে এক ছাত্রলীগ নেতা মরিয়মের গত প্রায় এক মাসের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘পৃথিবীতে এই একটা মেয়ে মরিয়ম মান্নানকে দেখেছি যে তার মাকে হারানোর পরেও অনলাইনে দফায় দফায় প্রোফাইল পিকচারে তার কান্নার ছবি দিতো! এক অজ্ঞাত মহিলার লাশকে খুব কনফিডেন্টলি তার মা বলে দাবি করলো! ইভেন তখন ওই লাশের কাছে থাকাকালীন সময়েও তাকে নিয়ে যেই পোস্ট করেছে সেখানে সে কমেন্টস করছে রিপ্লে দিচ্ছে!! কীভাবে সম্ভব ২৭ দিন পর মায়ের লাশ (তার ভাষ্যমতে) পেয়েও এভাবে অনলাইনে এতো এক্টিভ থাকা? আচ্ছা যাই হোক, উনি নাকি ওনার মাকে চিনতে ভুল করেননি! করবেনও না! তাহলে এখন কীভাবে তার মাকে জীবিত অক্ষত উদ্ধার করা হলো? সব যেনো কেমন রহস্যময়!!
‘যে টার্গেট ছিল অবশ্যই পূরণ হয়েছে, সাথে ২৫০০ থেকে ২৫০০০ ফলোয়ার! Our real Moriom Mannan ???? So proud of you girl ???? যেই নাটক দেখালেন, দেশবাসী মুগ্ধ হয়ে গেছে।’
এদিকে, মরিয়ম মান্নানের ফেসবুক পেজে দেয়া তার নিজের স্ট্যাটাসে সিলেটের বাসিন্দা মিথুন দত্ত মন্তব্যের ঘরে শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি মন্তব্যে লিখেন, ‘মেরিল প্রথম আলো শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে রয়েছে আপনার জন্যে পরিবেশ বান্ধব ২টা গাছ, ১টা কামাল সাবান।’
একই স্ট্যাটাসের মন্তব্যের ঘরে তরুণ তালুকদার নামে অপর একজন লিখেছেন, ‘আমি সবসময় একজন কোরিয়ান থ্রিলার পরিচালকের ভক্ত ছিলাম। সেটা হচ্ছে Bong Joon-ho। ভদ্রলোক মস্তিষ্ক নিয়ে খেলতেন। আমি ভাবতাম বাঙালি এমন পরিচালক হতে পারে না। আমার ইচ্ছেটা আজ পূরণ হলো। আজ আমি মরিয়মের ভক্ত। এই দুষ্ট মেয়েটা শুধু ইমোশন নিয়ে খেলে।’
নিশাত তামান্না মুন নামে এক নারী মন্তব্য করে লিখেছেন, ‘আপনি বড় ভয়ংকর। মায়ের লাশ পেয়েছেন এটা জানার পরেও যে অনলাইনে থেকে পোস্ট দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন আমার একটু সন্দেহ হয়েছিল যে এই অবস্থায় মানুষ অনলাইনে থাকে কীভাবে????????আবার আপনার আইডির প্রোফাইল পিকচার আপনি এটা দিছেন কেন? তখনও সন্দেহ হয়েছিল ভাই, ভয়ংকর অভিনয় ভাই রে ভাই।’
মাদারীপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সায়মা ইসলাম জান্নাত অনেকটা রসিকতা করে তার আবেগ ফেরত চেয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘বইন এতদিন জানতাম আমার এক্স দুনিয়ার সেরা অভিনেতা, এখন দেখি তুই তার থেকেও বড় পল্টিবাজ???? এতদিন এই কাহিনী সত্যি ভেবে কত খারাপ লাগছে আহারে..... আমার আবেগ ফেরত দে????????।’
মাহবুব হাসান নামে একজন মন্তব্য করে লিখেছেন, ‘নেটফ্লিক্স আরও একটা গল্প পেয়ে গেল, movie name: The mom return।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: