ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার সাব-কারাগারটি পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে। এর অবকাঠামোর বিভিন্ন অংশ ইতিমধ্যে খোয়া গেছে। কারাগারটির প্রধান ফটকের দরজার রড, জানালার কাঠের কোপাট ও গ্রিল নষ্ট হয়ে গেছে। ভবনের অবস্থাও জীর্ণ।
স্থানীয়রা জানান, পৌর শহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সন্ধারই এলাকায় ২ একর জমি নিয়ে কারাগারটি এইচ এম এরশাদের শাসনামলে এটি ছিল প্রাণবন্ত। তবে তাঁর শাসনামল শেষ হওয়ার পরই কারাগারটির সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই অবকাঠামোসহ কারাগারটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে।
জানা যায়, ২০০৩ সালের আগস্ট মাসে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা কারাগারটির স্থাপনাসহ দুই একর জমি মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে রাণীশংকৈল উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের অধীনে দেওয়া হয়।
তারাও কোনো ধরনের সংস্কার না করে একইভাবে ফেলে রেখেছে। এদিকে উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের কার্যালয়ের নিজস্ব ভবন না থাকায় উপজেলা পরিষদের আওতাধীন পুরোনো অফিসার্স ক্লাবের তিন কক্ষ বিশিষ্ট ঘর মাসিক ভাড়া নিয়ে তারা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কারাগার যেন নয় কোনো ভূতের বাড়ি হয়ে রয়েছে। কারাগারের প্রধান ফটকের রডগুলো নেই। নেই হাজতবাস আসামিদের সঙ্গেস্বজনদের সাক্ষাতের দরজা ও গ্রিলের রডগুলো, ভবনের ফ্লোর চারপাশের উচ্চতা সম্পূর্ণ দেয়ালের আস্তর উঠে এবং শেওলা ধরে বেহাল হয়ে রয়েছে।
জেল সুপারের অফিস কক্ষসহ অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নির্মিত কক্ষগুলোর দরজা জানালাসহ ভবনের আস্তর ইতিমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে। স্থানটি নেশার আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে।
এ ছাড়া কারাগারটির ভেতরে ঝোপঝাড়ের সঙ্গে বিষাক্ত পোকামাকড়ের বসবাস শুরু হয়েছে। তা ছাড়াও ভবনের বিভিন্ন অংশের ইট খুলে নিয়ে গেছে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা।
স্থানীয় বাসিন্দা উপজেলা রিকশা ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি খায়রুল ইসলাম বলেন, ‘আমার জন্মের পর থেকে দেখছি কারাগারটি এভাবে পড়ে রয়েছে। এটি দ্রুত সংস্কার করা না হলে এর ক্ষয়ক্ষতি আরও হতে পারে। তা ছাড়া এত বড় স্থাপনাসহ জায়গাটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকায় রাতে এখানে খারাপ লোকজনের উপস্থিতিতে সরব থাকে। শুনেছি এখানে মহিলা বিষয়কের অফিস হবে কিন্তু হচ্ছে না।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির স্টিভ এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে প্রথমে রাজি হননি। পরে তিনি বলেন, ‘আপনি উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেন।’
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নিরঞ্জন কুমার (অতিরিক্ত) বলেন, ‘আমি সদ্য দায়িত্ব নিয়েছি। বিষয়টি তেমন জানি না।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: