ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় যাত্রীবাহী ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোঁজ নাশরা নামে এক শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২২ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা মোহাম্মদ হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, শুক্রবার (২৮ আগস্ট) সকাল ৮টা থেকে ফের উদ্ধার অভিযান শুরু হলে দুই ঘণ্টাপর মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, নিহতের মধ্যে ১৮ জনের নাম-পরিচয় শনাক্ত হয়েছে-। বাকিদের পরিচয় শনাক্তে কাজ করছে পুলিশ।
জানা গেছে, নিহত ১৮ জনের মধ্যে একজন যুবক ছাড়া বাকি সবাই নারী ও শিশু। নিহতরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরশহরের পৈরতলা এলাকার আবু সাঈদের স্ত্রী মোমেনা বেগম (৫৫) ও ফারুক মিয়ার স্ত্রী কাজলা বেগম, দাতিয়ারা এলাকার মোবারক মিয়ার মেয়ে তাসফিয়া মিম (১২), সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের সাদেরকপুর গ্রামের মুরাদ হোসেনের ছেলে তানভীর (৮) ও চিলোকুট গ্রামের আব্দুল্লাহ মিয়ার শিশু কন্যা তাকুয়া (৮)।
এছাড়া নরসিংসার গ্রামের জামাল মিয়ার ছেলে সাজিম (৭), ভাটপাড়া গ্রামের ঝারু মিয়ার মেয়ে শারমিন (১৮), বিজয়গর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের ফতেহপুর গ্রামের জহিরুল হকের ছেলে আরিফ বিল্লাহ (২০), বেড়াগাঁও গ্রামের মৃত মালু মিয়ার স্ত্রী মঞ্জু বেগম (৬০), জজ মিয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগম (৪৭) এবং তার মেয়ে মুন্নি (১০) ও আব্দুল হাসিমের স্ত্রী কমলা বেগম (৫২), নূরপুর গ্রামের মৃত রাজ্জাক মিয়ার স্ত্রী মিনারা বেগম (৫০), আদমপুর গ্রামের অখিল বিশ্বাসের স্ত্রী অঞ্জনী বিশ্বাস (৩০) ও পরিমল বিশ্বাসের মেয়ে তিথিবা বিশ্বাস (২) এবং ময়মনসিংহের খোকন মিয়ার স্ত্রী ঝর্ণা বেগমের (৪৫)। বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়ন বাদেহাড়িয়া কামাল মিয়ার শিশু মেয়ে মাহিদা আক্তার (৬), একই উপজেলার মনিপুরের মৃত আব্দুল বারীর ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৫৮) নিহত হয়েছেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রুহুল আমিন বলেন, জেনারেল হাসপাতালে মরদেহগুলো নিয়ে আসা হয়েছে। শনাক্তের পর ১৭ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে শুক্রবার বিকাল সোয়া ৫টার দিকে লইসকা বিলে একটি যাত্রীবোঝাই ট্রলারের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা অপর একটি বালুবোঝাই ট্রলারের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে শতাধিক যাত্রীবোঝাই ট্রলারটি ডুবে যায়। এ ঘটনায় শনিবার সকাল পর্যন্ত ২২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়। তাদের মধ্যে ১৬ জনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা বলেন, দুর্ঘটনার পর পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে বালুবোঝাই ট্রলারের চালকসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। আটকরা পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। উদ্ধারকাজ এখনও চলছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: