ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে কৃষক শহীদ শেখ নিহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে বোয়ালমারী থানায় একটি মামলা হয়েছে।
সোমবার রাতে (২৬ জুলাই) বাড়ি ভাংচুর ও লুটপাটে ক্ষতিগ্রস্ত শাহীন মাতুব্বরের স্ত্রী মালা চৌধুরী বাদি হয়ে ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম মিনা মুকুলকে এক নম্বর আসামী করে অজ্ঞাতনামা আরও তিন শতাধিকসহ ৬৯ জনের নাম উল্লেখপূর্বক বোয়ালমারী থানায় মামলা করেছেন। এ মামলায় পুলিশ চারজনকে গ্রেফতার করে মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদপুর বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেছেন। মামলায় দুই নম্বর আসামী করা হয়েছে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মো. মাসুদ শেখকে। অভিযোগ রয়েছে মাসুদ শেখ ঢাকায় অবস্থান করে নিজ রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য এলাকায় প্রতিপক্ষকে আক্রমণ, তাদের বাড়িঘর ভাংচুর ও লুটপাট করে কোনঠাসা করার চেষ্টা করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় দলাদলির জের ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আসামীদের সাথে মামলার বাদির স্বামী শাহীন মাতুব্বর ও তার বংশীয় এবং পক্ষীয় লোকজনদের সাথে বিরোধ চলছিল। উক্ত বিরোধের জের ধরে পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল আলম মিনা মুকুল এবং ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবকলীগের সহ-সভাপতি মাসুদ শেখের নেতৃত্বে ও হুকুমে অন্যান্য আসামীরা গত ২৩ জুলাই দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ওই ইউনিয়নের ময়েনদিয়া গ্রামের লিটন বিশ্বাস, বাবলু বিশ্বাস, মনির বিশ্বাসের বাড়িসহ ২৩টির অধিক ঘরবাড়ি ভাংচুর ও লুটপাট করে। এ সময় মাসুদ শেখ, সিদ্দিক শেখ, আওয়াল শেখ বাদির স্বামীকে মারধর করে। ভাংচুর ও লুটপাটে অংশগ্রহণকারীরা ওই সব বাড়ি থেকে প্রায় ৫০ ভরি স্বর্ণালংকার, নগদ ২০ লাখ টাকা, আনুমানিক ৩০ লাখ টাকার গবাদিপশু, ১০ লাখ টাকার ফসলাদি এবং ৩৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে বলে বাদি এজাহারে উল্লেখ করেন।
খাদিজা আক্তার নামে এক গৃহবধূ জানান, পরমেশ্বরদী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মো. মাসুদ শেখ ঢাকায় অবস্থান করেন। তিনি রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষে এলাকায় তার প্রতিপক্ষের লোকেদের উপর নানান অজুহাতে প্রায়শই আক্রমণ, ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং লুটপাট করে থাকেন। তিনি আরও জানান, মাসুদ ঘটনার দিন ফোন করে পার্শ্ববর্তী সালথা উপজেলার খাড়দিয়া গ্রাম থেকে লাঠিয়াল বাহিনী এনে আমাদের বাড়িঘর লুটপাট এবং ভাংচুর করিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ২৩ জুলাই উপজেলার পরমেশ্বরদী ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ সময় ধারালো অস্ত্রের কোপে পরমেশ্বরদী গ্রামের ফকিরপাড়ার আ. রাজ্জাক ফকিরের ছেলে শহীদ ফকির (৪৭) নামের এক কৃষক নিহত হন।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার অফিসার ইন চার্জ মোহাম্মদ নুরুল আলম বলেন, মামলায় অভিযুক্ত বাকি আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: