কোরবানির মাংস খেয়ে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন স্বাদ পাননি বলে অভিযোগ করেন। এ তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আইরিন আক্তার (২১) নামের এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাঁশখালী থানা পুলিশ গতকাল (২৪ জুলাই) রাতে আনোয়ারা উপজেলা হাসপাতালে স্বামীর ফেলে যাওয়া গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে।
হারুনুর রশিদ আইরিনকে কয়েকদফা পিটিয়ে জখম করে। গতকাল (শনিবার) পর্যন্ত আইরিন ঘরের কাজ করলেও ভাত খাওয়া বন্ধ করে দেন। শনিবার সকাল ৯টায় আইরিনকে আবারো মারধর করলে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।পরিবারের লোকজন গোপনে আইরিনকে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সময় হাসপাতালে লাশ ফেলে কৌশলে সবাই পালিয়ে যায়।
এবিষয়ে আনোয়ারা হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবু মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন বলেন, গৃহবধূ আইরিনকে তার স্বজনরা মৃত অবস্থায় হাসপাতালে এনেছিল।
ঘটনার পর পর স্বামী ও ভাসুর পলাতক রয়েছে। হত্যার পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আইরিন আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করে।
আইরিন আক্তারের শাশুড়ি নুর বানু বলেন, মাংসের রান্না স্বাদ না হওয়ায় আইরিনকে আমার ছেলে পিটিয়েছে ঠিক, কিন্তু হত্যা করেনি। আমার ছেলে বলেছে, ওড়না পেঁচিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে। তবে কিভাবে আইরিন মারা গেছে, কোথায় ওড়না পেঁচানো হয়েছে আমি দেখিনি।
সাধনপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সাধনপুর গ্রামের ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ‘আইরিনের যৌতুকলোভী স্বামী হারুনুর রশিদের অত্যাচারে দফায় দফায় সালিস বসে। সালিসে হারুনুর রশিদের দোষ প্রমাণিত হত। মূলত যৌতুক না পেয়েই মাংস রান্নার অজুহাতে আইরিনকে হত্যা করেছে।
আইরিনের বাবা আবু ছালেহ এবং মা শামশুন্নাহার বলেন, আমার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করেছে তার স্বামী। হত্যার পর তারা আমার মেয়ের লাশ গায়েব করার চেষ্টা করেছিল। আমার মেয়ের হত্যার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
বাঁশখালীর রামদাশ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক মিনহাজ মাহমুদ বলেন, আইরিনের মৃত্যুর বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে আইরিনের লাশ আইরিনের বাপের বাড়িতে দাফনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইরিনের বাবা-মা। বিষয়টি তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: