সাভারের আশুলিয়ায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী শিমু আক্তার ফারজানা (৩১) কে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় স্বামী শহিদুল ইসলাম মীর (৩৫)কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল।
বুধবার (২০ মার্চ) দুপর ২টার দিকে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান।
এর আগে বুধবার (২০ মার্চ) ভোর রাতে আশুলিয়ার শিমুলতলা দরগারপাড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
নিহত শিমু আক্তার ফারজানা (৩১) জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার উত্তর কালামপুর গ্রামের মৃত জহুরুল হকের মেয়ে।
গ্রেপ্তারকৃত শহিদুল ইসলাম মীর (৩৫) আশুলিয়ার শিমুলতলা দরগারপাড় এলাকার মৃত নজরুল ইসলাম মীরের ছেলে।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, নিহত ফারজানা ও তার স্বামী শহিদুল ইসলাম মীর গাজীরচট এলাকার আব্দুল হকের মালিকানাধীন বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। নিহতের স্বামী একজন নেশাগ্রস্থ। এ নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো। অন্যান্য দিনের মত ঘটনার দিন রাতেও তাদের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে শহিদুল তার স্ত্রী ফারজানাকে কাঠের লাঠি দিয়ে বেদম মারধর করলে ঘটনাস্থলেই ফারজানার মৃত্যু হয়। ঘটনার খবর পেয়ে র্যাবের একটি আভিযানিক দল ঘটনাস্থলে এসে নিহতের স্বামী শহিদুলকে আটক করে।
র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামী জানায় যে, গ্রেপ্তারকৃত আসামী শহিদুলের সাথে ১৫ বছর পূর্বে নিহত শিমুর পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বৈবাহিক জীবনে তাদের ৮ বছরের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে।
বিবাহের পর হতেই নিহতের কাছে যৌতুক হিসেবে মোটা অংকের টাকা দাবী করে আসছিলো। বিভিন্ন সময় শহিদুলের চাহিদা মোতাবেক শিমু তার পরিবারের কাছ থেকে টাকা পয়সা নিয়ে শহিদুলকে দিয়ে আসছিলো। এক পর্যায়ে শিমু তার চাহিদা মোতাবেক যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত ৫ বছর পূর্বে তাদের মাঝে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
পরবর্তীতে উভয় আত্মীয় স্বজনের সহযোগিতায় গ্রেপ্তার শহিদুল পুনরায় শিমুকে বিবাহ করে সংসার শুরু করে। এর কিছু দিন পর হতে শহিদুল আবারও যৌতুকের জন্য শিমুকে চাপ সৃষ্টি করে ও মারধর করতো।
এরই প্রেক্ষিতে গত ১৯ মার্চ বিকালে যৌতুকের টাকা নিয়ে তাদের মাঝে বাক-বিতান্ডা সৃষ্টি হয়। বাক-বিতান্ডার এক পর্যায়ে শহিদুল ভুক্তভোগী শিমুকে এলোপাথারি লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এতে শিমু অচেতন হয়ে পড়লে গ্রেপ্তারকৃত শহিদুল তাৎক্ষনিক নিকটতম হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী ভুক্তভোগী শিমু আক্তার ফারজানাকে কাঠের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।
র্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সেই সাথে ভবিষ্যতেও আমাদের এমন অভিযান অভ্যতা থাকবে বলেো জানান তিনি।
জনপ্রিয় খবর
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: