নরসিংদীর রায়পুরায় সাবিকুন্নাহার (২০) নামে এক অন্তঃসত্ত্বা মহিলার ডেলিভারির সময় ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে ডাক্তারের বিরুদ্ধে।
বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটেছে।
সাবিকুনৃনাহার এর ভাই মিজান ও তার স্বজনরা জানান, মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১টার দিকে অন্তঃসত্ত্বা সাবিকুন্নাহারের গর্ভকালীন ব্যাথা উঠলে পরিবারের লোকজন দ্রুত তাকে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্স প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর অন্তঃসত্ত্বা সাবিকুন্নাহার ও বাচ্চা সুস্থ আছে বলেও জানান। এসময় আমরা রোগীকে সিজার ডেলিভারির করানোর কথা বললে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নরমাল ডেলিভারিতে বাচ্চা প্রসব হবে বলে জানান। পরবর্তীতে সকালে পুনরায় গর্ভকালীন ব্যাথা তীব্র হলে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যায়। পরে কিছুক্ষন পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্স ডেলিভারির পর মৃত বাচ্চা আমাদের হাতে দিয়ে জানান সাবিকুন্নাহার মৃত বাচ্চার জন্ম দিয়েছেন। এছাড়া ডেলিভারির পর রোগীকে ট্রলি ব্যতিত হাঁটিয়ে বেডের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল তখন তার নিচ দিয়ে অনবরত রক্ত বেয়ে পরতে দেখে আমরা ট্রলির ব্যাপারে কথা বলি। তখন তারা বলেন নরমাল ডেলিভারিতে ট্রলি ব্যবহার করা হয় না। পরে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে আমাকে (মিজান) হাসপাতালের ভিতর তালাবদ্ধ করে রাখে। পরে আমার পরিবারের সদস্যরা এসে আমাকে ছারিয়ে নেয়। শুধু তাই নয় ওটিতে থাকা অবস্থায় আমার বোনকে এক নার্স থাপ্পরও মারে। আমরা বিষয়টা জানতে পেরে জিজ্ঞেসা করলে তারা আমাদের সাথেও খারাপ আচারণ করে।
ভুক্তভোগী সাবিকুন্নাহার বলেন, রাতে ভর্তি করানোর পর আমাকে ব্যাথা বাড়ানোর জন্য একটা ইনজেকশন পুশ করা হয়। পরবর্তীতে বলা হয় ভোরে তারা আমাকে স্যালাইন লাগাবে। ভোরে আমার স্যালাইন লাগানোর জন্য ডাকলে তারা আমার মায়ের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। সকালে যখন ব্যাথা বাড়তে থাকে তখন আমাকে ওটিতে নিয়ে হাসপাতালের একজন আমার পেটের দিকে জোরে জোরে চাপ দিতে থাকে তখন আমার দম বন্ধ হয়ে আসার মতো অবস্থা হয়। এক পর্যায়ে আমি সহ্য করতে না পেরে তার হাতটা সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে সে আমাকে থাপ্পর মারে। পরে আরেকজন বার বারই আমাকে জিজ্ঞেসা করতেছিলো বাচ্চা নড়াচড়া করার কোন ফিল আমি পাচ্ছি কি না, তখন আমি তাদের বাচ্চা নড়াচড়া করছে বলে জানাই। পরে তারা আমাকে জোর করে বাচ্চা প্রসবের চেষ্টা করে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত ডা.জেসমিন বলেন, বাচ্চার মায়ের কিন্তু নরমাল ডেলিভারিতে কোন সমস্যা ছিলো না। স্বাভাবিক নিয়মেই বাচ্চা হয়েছে। বাচ্চা হওয়ার পর কাঁদে নাই এবং কোন শ্বাসপ্রশ্বাসও নেয়নি। তাই বাচ্চাকে মৃত ঘোষনা করা হয়েছে। ওটিতে রোগীকে থাপ্পর মারার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন তাদের বাচ্চা মারা গেছে, এখন তারা কত কথায় বলবে। তবে থাপ্পর মারা বা খারাপ ব্যাবহার এরকম কোন ঘটনা ঘটে নি।
এ ব্যাপারে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য পঃপঃ কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ নূরউদ্দিন জাহাঙ্গীর-এর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি তা রিসিভ করে নি।
এই বিভাগের অন্যান্য খবর
জনপ্রিয় খবর
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: