গত ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ইং তারিখে পদ্মা ব্যাংক পিএলসি পটুয়াখালী শাখার সিনিয়র অফিসার ও শাখা অপারেশন ম্যানেজার শাহিনুর আক্তার এবং উক্ত ব্যাংকের অফিসার মেহেদী হোসাইন কর্তৃক স্বাক্ষরিত একটি চিঠি জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে পাঠানো হয়। পদ্মা/পটুয়াখালী/ক্রেডিট/২০২৪/
পটুয়াখালী জেলা নির্বাচন অফিসার বরাবর পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে- উপরোক্ত বিষয়ে জানানো যাচ্ছে যে আগামী ৯ মার্চ, ২০২৪ অনুষ্ঠিত মেয়র পদে নির্বাচনে পটুয়াখালী জেলায় যে সকল প্রার্থীগন অংশগ্রহন করতে যাচ্ছেন তাদের মধ্যে মহিউদ্দিন আহম্মেদ, (জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর-৬৮৬২২৭৮৯০৭ পিন-১৯৭৬৭৮২৯৫০৫১১৯৬৭৩), পিতাঃ মোয়াজ্জেম হোসেন, মাতা-সাফিয়া বেগম, বর্তমান ঠিকানাঃ মুসলিম পাড়া, পটুয়াখালী সদর, পটুয়াখালী, একজন সম্ভাব্য মেয়র পদপ্রার্থী।
উল্লেখ্য, আবুল কালাম আজাদ, প্রোপ্রাইটর। মেসার্স আবুল কালাম আজাদ, আমাদের পদ্মা ব্যাংক পিএলসি (তৎকালীন দি ফার্মার্স ব্যাংক লিমিটেড), পটুয়াখালী শাখার একজন খেলাপী গ্রাহক। যিনি ২৮.১০.২০১৮ ইং তারিখ হতে পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড, পটুয়াখালী শাখা হতে সর্বমোট ২৪কোটি ৫০লক্ষ টাকা ঋণ গ্রহণ করেছেন যা ১৬.১০.২০২২ইং তারিখ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। ঋণ হিসাবটি নিয়মিত না করায় বিগত ০১.০২.২০২৪ ইং হতে মন্দ ও ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকৃত হযয়ে যায় এবং উক্ত ঋণ হিসাবে মহিউদ্দিন আহম্মেদ একজন জামিনদার, তিনি ঋণ গ্রহণ এর সময় ব্যাংক বরাবর এই মর্মে অঙ্গীকার করেছিলেন যে, "আবুল কালাম আজাদ, প্রোপ্রাইটর মেসার্স আবুল কালাম আজাদ উক্ত ঋণ প্রদান এ ব্যর্থ হলে আমি জামিনদার হিসাবে ঋণের সমুদয় টাকা প্রদান করব”।
খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে প্রধান কার্যালয় ও শাখা থেকে গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ করা হয় এবং ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে বিভিন্ন সময়ে শাখা হতে তাগাদা পত্র প্রদান করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এমতবস্থায়, উপরোক্ত বিষয় বিবেচনা পূর্বক আসন্ন মেয়র নির্বাচনে সম্ভাব্য মেয়র পদপ্রার্থী পদ্মা ব্যাংক লিমিটেড, পটুয়াখালী শাখার খেলাপী গ্রাহক আবুল কালাম আজাদ, প্রোপ্রাইটর মেসার্স আবুল কালাম আজাদ হিসাবে জামিনদার মহিউদ্দিন আহম্মেদ, প্রার্থী হয়ে থাকলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এর জন্য আবেদন জানাচ্ছি।
বিষয়টি আপনার সদয় অবগতির এবং সুবিবেচনার জন্য জানানো হলো।
ঋন নেয়ার বিষয়ে স্বীকার করে আবুল কালাম আজাদ জানান, ‘পদ্মা ব্যাংক থেকে লোন নিয়েছি সেটা ঠিক তবে বিভিন্ন কিস্তিতে সেই লোন পরিশোধ করতেছি’। লোনের মেয়াদ শেষ হলেও কেন ঋণ খেলাপি নয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ‘ওটা সিসি লোন এবং এখনো কিছু টাকা তারা (পদ্মা ব্যাংক) পাবে’।
জানতে চাইলে পটুয়াখালী জেলা রিটার্নিং অফিসার ও সিনিয়র নির্বাচন অফিসার খান আবি শাহানুর খান জানান, যাচাই বাছাইয়ের দিন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। ঋনখেলাপীর ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে শুধু মাত্র ১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদপ্রার্থী নিজামুল হককে ঋনখেলাপী হিসাবে তালিকাভুক্ত করায় তার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। তাছাড়া যাচাই-বাছাই’র কারো কোন অভিযোগ গ্রহনযোগ্য নয় বলে জানান তিনি।
পদ্মা ব্যাংক (তৎকালীন দি ফার্মাস ব্যাংক লিমিটেড) থেকে কোনো অভিযোগ পেয়েছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, “পদ্মা ব্যাংকের যে বাপ বাংলাদেশ ব্যাংক তারাই বলছে একজন কাউন্সিলর প্রার্থী ছাড়া আর কোনো প্রার্থী ঋনখেলাপী নয়। পদ্মা ব্যাংকসহ সকল ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকে আমরা চিঠি পাঠিয়েছি, আগে তারা করছে কি?” পাল্টা প্রশ্ন করেন তিনি। পদ্মা ব্যাংকের গ্রাহক(মেয়র প্রার্থী) আবুল কালাম আজাদ ঋনক্ষেলাপী কি না এবং ওই গ্রাহকের জামিনদার (মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র) মহিউদ্দিন আহমেদ ঋনখেলাপী কি না তা আমার জানা নেই।
প্রসঙ্গত, আগামী ৯ মার্চ পটুয়াখারী পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ লক্ষে মনোনয়ন দাখিলের পর গত ১৫ই ফেব্রুয়ারী তারিখ প্রার্থীতা যাচাই বাছাই অনুষ্ঠিত হয়। ওইদিন ভোটার তালিকায় অসঙ্গতি থাকায় মেয়র মহিউদ্দিনের স্ত্রী মার্জিয়া আক্তারের প্রার্থীতা বাতিল হয়ে যায়। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারী প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্ধ করা হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: