নালিতাবাড়ীর চেল্লাখালী নদীর বুকে বোরো আবাদ

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি | ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, ১৯:০৮

নালিতাবাড়ীর চেল্লাখালী নদীর বুকে বোরো আবাদ

শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার উজান থেকে নেমে আসা খরস্রোতা চেল্লাখালী নদীটি পোড়াগাঁও ইউনিয়নের বারমারী এলাকার বুক চিরে প্রবাহিত হয়েছে। এ নদীর সুস্বাদু মাছ শিকার করতো এলাকার সৌখিন মৎস শিকারীরা। কালক্রমে এই নদীটি এখন অনেকটাই মরা খালে পরিনত হয়েছে। এ নদীতে এখন আর তেমন মাছ পাওয়া যায় না। বর্ষায় থাকে খরস্রোত আর শুকনো মৌসুমে মরা খালে পরিনত হয়।

স্থানীয়রা জানান, প্রতি বছর নদীটি কোটি টাকায় ইজারা দিয়ে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় করছে। বর্তমান শুকনো মৌসুমে নদীর পাড়ে পলিমাটি পড়া জমিতে স্থানীয় কৃষকরা বোরো ধান রোপন করেছেন। বর্তমানে ধানের খেত সবুজ হয়ে উঠেছে। আবাদের লক্ষণও খুব ভালো। এতে লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, এক ইঞ্চি জায়গা পতিত না রাখার সরকারি নির্দেশনায় চেল্লাখালী নদীর পাড়ের কৃষকরা ধান উৎপাদনের লক্ষে এবার ঝুঁকছেন নদীতে বোরো আবাদে। মৌসুমের শুরুতেই বীজতলা তৈরি করে উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান রোপন করেছেন। ইতোমধ্যে রোপণকৃত ধান নদীর বুকে সবুজের সমারোহ সৃষ্টি করেছে। এতে কৃষকরা নিজের সংসারের খাদ্যের চাহিদা পুরন করতে পারছেন। তারা আরো জানান, নদীর বুকের জমিতে আবাদ করা অনেক সহজ এতে সেচ দিতে হয় না। এমন সার বিষও তেমন লাগে না।

ওই এলাকার কৃষক ফারুক হোসেন বলেন, নদীর পাড়ের জমি পলি পড়ায় অনেক বেশি উর্বর হয়েছে। এই উর্বর জমিতে ধানের ফলন ভালো হয়। একরে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ মন হারে ধান পাওয়া যায়। নদীর বুকে আগাম বোরোধান রোপণ করায় ধান কাটার সময় পাহাড়ি ঢলের ঝুঁকিও নেই। পাহাড়ি ঢল নামার আগেই তাদের সোনার ফসল ঘরে তুলতে পারবেন। উপজেলার বুরুঙ্গা ব্রিজের দক্ষিণ পাশে তিনি এবার ৯০ শতাংশ নদী পাড়ের জমি আবাদ করেছেন। এছাড়া জহুর উদ্দিন, হাবিল উদ্দিন ও আছমত আলীসহ প্রায় ১৫ জন প্রান্তীক কৃষক ওই নদীর বুকে প্রায় ২৫ একরের মতো জমিতে বোরোধান চাষ করেছেন।

এদিকে, চেল্লাখালী নদীর চলতি বাংলা সনের ইজারাদার জিলানী এন্টারপ্রাইজের সত্তাধিকারী মো. জিলানী বলছেন ভিন্ন কথা। তিনি জানান, তার ইজারা নেওয়া আন্ধারুপাড়া ও বুরুঙ্গা মৌজার নদীর পাড়ে কৃষকরা নদী দখল করে বোরো আবাদ করেছেন। এতে তাদের বালু উত্তোলন ও পরিবহন করতে সমস্যা হচ্ছে।

এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা কৃষিবিদ আনোয়ার হোসেন বলেন, চেল্লাখালী নদীর বুকে কৃষকরা বোরো ধান রোপন করেছেন খাদ্য উৎপাদন নিরাপত্তায় এটি খুব ভালো উদ্যোগ। নদীর পাড়ের পলিমাটিযুক্ত জমি ধান উৎপাদনের জন্য ভারেঅ, ফলনও বেশি হয়। তাই ধান রোপনের পাশাপাশি নদীর পাড়ে সবজি আবাদ করলেও কৃষক লাভবান হতে পারবেন।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


জনপ্রিয় খবর