বছরের প্রথম দিনে যখন সরকার দেশের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিচ্ছেন, তখন অতিরিক্ত শিক্ষার্থীর হিসাব দেখিয়ে বেশি বই নিয়ে এসে সে বইগুলো গত বুধবার সকালে টেন্ডার ছাড়াই কেজি দরে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার চকনোদবাটি সিদ্দিকীয়া দাখিল মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মনোয়ারা বেগম ও মৌলভী শিক্ষক নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে। পরে স্থানীয়রা সে বইগুলো রাস্তায় আটক করে উপজেলা শিক্ষা অফিসে জমা দিলে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাদ্রাসার সুপারকে শোকজ করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই প্রচন্ড শীত ও কুয়াশার মধ্যে গত বুধবার মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার ওই মাদ্রাসার সহকারী মৌলভী ও নৈশ্যপ্রহরীর সহযোগিতায় মাদ্রাসা থেকে আবু মুসা নামের এক বই ক্রেতাকে এলাকাবাসী রাস্তায় ভ্যান আটকিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে বই রেখে ভয়ে পালিয়ে যায়। এসময় জানা যায় কেজি দরে ওই বইগুলো কিনেছেন। সে হিসাবে মাদ্রাসার শিক্ষক বই ক্রেতার কাছ থেকে বুঝে নিয়েছেন ৬ হাজার ৫শ টাকা। তবে এগুলো বিক্রি করা যে অবৈধ তা জানেন না পুরনো বই ক্রেতা স্বল্প শিক্ষিত ওই ব্যক্তি। যদিও নতুন কিংবা পুরনো সব বই-ই যথাসময়ে শিক্ষা অফিস বরাবর ফেরত দেওয়ার কথা।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও ইউনিয়ন আ'লীগের সহসভাপতি মো. হাফিজুর রহমান এবং ইউনিয়ন আ'লীগের সাবেক দপ্তর সম্পাদক মো. তোফাজ্জল হোসেনসহ আরও অনেকে বলেন, মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মনোয়ারা বেগম এবং মৌলভী শিক্ষক মো. নাসির উদ্দীনের যোগসাজশে নৈশ্যপ্রহরী মো. শহিদুল ইসলামের সহযোগিতায় অব্যবহিত চার বস্তা বই যার ওজন ৬ মন ২৫ কেজি অবৈধভাবে বিক্রি করে। এরপর সকালে কুয়াশার মধ্যে সেই বইগুলো নিয়ে যাওয়ার সময় পার্শ্ববর্তী সিমুলিয়া বাজারে গেলে এলাকাবাসী বইগুলো আটক করে। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করলে আটককৃত বই গুলো উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়ে জমা দেওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর আমরা ইউপি চেয়ারম্যানের সহায়তায় গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে বইগুলো পাঠালে শিক্ষা কর্মকর্তা লিখিতভাবে বইগুলো অফিসে জমা নেয়। অবৈধভাবে বই নিয়ে বিক্রি করায় ওই ভারপ্রাপ্ত সুপারের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিও জানান তারা।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক নাসির উদ্দীন কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি সাক্ষাতে কথা বলতে চান।
এবিষয়ে বক্তব্য জানতে প্রতিষ্ঠানের সুপার মনোয়ারা বেগম এর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। তাই তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ টি এম জিল্লুর রহমান বলেন, তারা এভাবে বইগুলো বিক্রি করায় প্রতিষ্ঠান প্রধানকে শোকজ করা হয়েছে। শোকজের জবাব পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এই বিভাগের অন্যান্য খবর
জনপ্রিয় খবর
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: