দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে পৌরশহরে অবস্থিত পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিস ও সরকারি সম্পত্তি দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে ফিরোজ কবির সহ বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায়, মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) রাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহণ করা সম্পত্তি লিজ কেটে নিজেদের দাবি করে দখলে নেওয়া সাত জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছে ঘোড়াঘাট উপজেলাের দায়িত্বে থাকা পাউবো'র গাইবান্ধা পলাশবাড়ী শাখার উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও শাখা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক।
সরেজমিনে গিয়ে পাউবোর অফিস সংলগ্ন একটি ভবন দখলে সত্যতা নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর আগে পাউবো ভবনের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি রফিক জানান, বেশ কয়েক বার আমার কাছে তারা ভবনের চাবি চেয়েছিল। আমি চাবি দেয়নি। চাবি না পেয়ে তালা ভেঙ্গে ভিতর ঢুকে এবং তিনটি দরজা তারা সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলে। পরে আমি নিজেই একটি দরজার তালা খুলে দেই। প্রথম দিকে ভবনের বিভিন্ন ফাঁকফোকর দিয়ে ভিতরে তারা কি করছে বুঝা যাচ্ছিলো, এখন ফাঁকফোকর গুলো এমন করে বন্ধ করে দিয়েছে বাহির থেকে আর বুঝার উপায় নেই যে ভিতরে তারা কি করছে।
এদিকে পৌরশহরের হোটেল-রেস্তোরাঁ, হাট-বাজারসহ গোটা উপজেলায় এবিষয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে বলছেন, ১৯৮৬ সালে এরশাদ সরকারের শাসন আমলে দেশের বন্যা নিয়ন্ত্রণ,পানি নিষ্কাশন ও সেচ প্রকল্প বাস্তবায়নে এসব সম্পত্তি অধিগ্রহণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সরকারি অফিস ও আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হয়। ৩৫/৩৬ বছর পর শুনছি এই সম্পত্তি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নয়। এলাকাবাসীর ধারণা প্রভাবশালী কারও সহযোগিতায় এই সরকারি ভবনে হাত দেবার তারা সাহস পেয়েছে। তাছাড়া তাদের এত সাহস নেই যে, দিনে-দুপুরে সরকারি সম্পত্তি দখলে নিয়ে তালা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে কাজ করার।
এ বিষয়ে ফিরোজ কবির বলেন, ভূমি অফিস থেকে ছয়-সাত মাস আগে আমার নামে বারো শতক ও আমার স্ত্রী নামে তিন শতক এই দাগে লিজ নিয়ে এসেছি। আমার স্ত্রীর তিন শতকের মধ্যে দুই শতক আবাসিকের লিজ কাটা আছে। তাই আমি আমার স্ত্রী কে নিয়ে একটি ভবনে উঠেছি। কোন দরজার তালা ভাঙ্গা হয়নি। শুধু মাত্র ধূলোময়লা পরিষ্কার করেছি। তিনি আরও জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানিয়ে ছিলাম কিন্তু তারা কোন গুরুত্ব দেয়নি। যদি জায়গা তাদের হয় তবে আমি ছেড়ে দিয়ে চলে যাবো।
পাউবো'র উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও শাখা কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক (পলাশবাড়ী শাখা, গাইবান্ধা) বলেন, ঘোড়াঘাট উপজেলাতে বাপাউবো'র অধিগ্রহণকৃত ভূমিতে নিজস্ব অফিস অবস্থিত। কতিপয় ব্যক্তি অফিস ভবন ভেঙ্গে সরকারি সম্পত্তি অবৈধ ভাবে দখল করার চেষ্টা করছে যা সম্পূর্ণভাবে বেআইনী ও সরকারি সম্পত্তি আত্মসাৎ করার সামিল। এবিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে এবং কয়েক দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে ঘোড়াঘাট ভূমি অফিস যাবেন।
ঘোড়াঘাট উপজেলার কমিশনার (ভূমি) মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, ভিপি 'ক' সম্পত্তি হওয়ায় ১ একর ২৬ শতক জায়গা যথাযথ আইন মেনে সতেরো জনকে এক বছরের জন্য লীজ দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের আবাসিকের লীজ কাটা আছে। বাকীরা এই জায়গায় কৃষি কাজ ছাড়া কোন ধরনের ইমারত অথবা বাড়িঘর নির্মাণ করতে পারবে না। পানি উন্নয়ন বোর্ড যদি কাগজ দেখাতে পারে তবে তৎক্ষণাৎ তাদের লীজ বাতিল করা হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: