নরসিংদী সদর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের উদ্দেশ্য " মাইরের উপর ঔষধ নাই" বক্তব্য প্রদান করা মামলায় নরসিংদী জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আহসানুল ইসলাম রিমন এর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক জামিন না মঞ্জুর করেছেন।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোসতাক আহমেদ এ আদেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ নভেম্বর (বুধবার) নৌকা প্রার্থী বিজয়ের লক্ষ্যে এক মতবিনিময় সভায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসানুল ইসলাম রিমন এ বক্তব্য প্রদান করেন। তার বক্তব্যটি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এবং সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮ এর পরিপন্থী বলে পরেরদিন বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ ওমর ফারুক বাদী হয়ে নরসিংদী মডেল থানায় ছাত্রলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করেন। ওমর ফারুকের করা মামলায় শুক্রবার দুপুরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতিকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন। পরে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালত মোঃ মাহমুদুল হাসান খান এর আদালতে হাজির করলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরন করেন। ১১ দিন জেল হাজতে থাকা অবস্থায় আজ (সোমবার) জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রিমনের জামিন শুনানির জন্য আবেদন করেন। আসামী পক্ষের আইনজীবীদের দীর্ঘ শুনানির পর আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করেছেন। আসামী পক্ষে ছিলেন, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট কাজী নাজমুল ইসলাম, সম্পাদক এডভোকেট নজরুল ইসলাম রিপন, ব্যারিস্টার আদনান সরকার সহ অর্ধশতাধিক আইনজীবী। অপরদিকে রাস্ট্র পক্ষে ছিলেন, এডভোকেট ফজলুল হক (পিপি)।
রিমনের আইনজীবী বলেন, আমরা আশা করে ছিলাম বিজ্ঞ আদালত জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির জামিন মঞ্জুর করবেন। দীর্ঘ শুনানির পরও আদালত তার জামিন না মঞ্জুর করেছেন। আমরা তার জামিনের জন্য এখনও আশাবাদী। আদালতের প্রতি সন্মান জানিয়ে আমরা আমাদের আইনী লড়াই চালিয়ে যাবো।
আগত ছাত্রলীগ নেতা বলেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রিমনের জামিন না দেওয়ায় আমরা হতাশ। আমরা আশা করেছিলাম আদালত তাকে জামিন দেবেন। তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগের সভাপতির বেফাঁস বক্তব্য যদি আচরণ বিধি লঙ্ঘন হয়, তাহলে মাধবদী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতির বক্তব্যে "নৌকার লোক পলানের পথ পাবে না" বলে বক্তব্য প্রদান করেন তাহলে সেটা কি? তাকে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা এখনও গ্রেপ্তার করে না কেন? জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি যদি অপরাধ করে থাকেন, তাহলে তিনি কি অপরাধ করেননি? তাকে কেন গ্রেপ্তার করা হলো না? একই অপরাধে ছাত্রলীগের সভাপতি আজ ১১ দিন ধরে জেল হাজতে আটক রয়েছেন। একদেশে দুই নিয়ম চলতে পারেনা। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সংগঠন। আমরা বঙ্গবন্ধুর সৈনিক ও জননেত্রী শেখ হাসিনার কর্মী। ছাত্রলীগ কখনও দলের সাথে বেঈমানী করেনা। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আশা করবো হাজারো ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মনের ভাষা বুঝতে পারবে এবং দ্রুত ছাত্রলীগের সভাপতি আহসানুল ইসলাম রিমনকে মুক্তি দিবে।
অপরদিকে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতির জামিন হবে এমন কথা শুনে সকাল থেকে জেলা ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিট থেকে শত শত নেতাকর্মী ও আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতারা আদালত চত্বরে জড়ো হতে থাকেন। বেলা বাড়ার সাথে সাথে তাদের সংখ্যা বাড়তে থাকে।
উল্লেখ, ২৯ নভেম্বর নরসিংদী সদর-১ আসনের প্রার্থীদের উদ্দেশ্য " মাইরের উপর ঔষধ নাই" বলে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আহসানুল ইসলাম রিমন বক্তব্য প্রদান করেন।
তার বক্তব্যটি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এবং সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা ২০০৮ এর পরিপন্থী বলে বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) রাতে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ ওমর ফারুক বাদী হয়ে নরসিংদী মডেল থানায় ছাত্রলীগ সভাপতি রিমনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। অপরদিকে একইদিনে একই ধারায় নরসিংদী-১ এর নির্বাচনী ইলেকটোরাল ইনকোয়ারী কমিটির সদস্য ও যুগ্ম জেলা জজ নাহিদুর রহমান নাহিদ আহসানুল ইসলাম রিমনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কেনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছে ২৪ ঘন্টার মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ওমর ফারুকের করা মামলায় শুক্রবার দুপুরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আহসানুল ইসলাম রিমনকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেন। পরে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালতে হাজির করলে আদালত তাকে জেল হাজতে প্রেরন করেন।
এই বিভাগের অন্যান্য খবর
জনপ্রিয় খবর
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: