নওগাঁয় একটি চাউল কল (ধান চাতালের) ঘর থেকে লাইলী বেগম (৪৫) নামে এক গৃহবধূ (নারী শ্রমিকের) গলা কাটা মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন নওগাঁর মহাদেবপুর থানা পুলিশ।
ঘটনার পর থেকে গৃহবধূ লাইলী বেগম এর স্বামী আমজাদ হোসেন পলাতক রয়েছে। নিহত গৃহবধূ লাইলী বেগম নওগাঁর মান্দা উপজেলার কসব ( শিয়াটা) গ্রামের মৃত মজিবর রহমান প্রাং এর মেয়ে।
লাইলী বেগম এর বড় ভাই আঃ সামাদ ও সম্পর্কে মামা মোকছেদ আলী সরকার জানান, লাইলী প্রথম পক্ষের স্বামীর সাথে ঘর সংসার করাকালে তাদের এক মেয়ে সন্তান হয়। এরইমাঝে লাইলী বেগম এর প্রথম স্বামী মারা যায় এবং লাইলী বেগম এর মেয়েকে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলাতে বিয়ে দেওয়া হয়।
বছর ৩-৪ পূর্বে লাইলী বেগম জানান, সে আমজাদ হোসেন নামে এক জনকে বিয়ে করেছেন। বিয়ের পরই তারা স্বামী-স্ত্রী ধান-চাতালে কাজ করতেন। আজ রবিবার ৩ ডিসেম্বর মোবাইল ফোনে জানানো হয়, লাইলী কে হত্যা করা হয়েছে, এমন খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। এসেই শুনি লাইলীকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে।
অপরদিকে স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা যায়, নিহত লাইলী বেগম মহাদেবপুর থানাধীন নওহাটামোড় পুলিশ ফাঁড়ি এলাকার চকগৌরী ইউনিয়ন পরিষদ এলাকার মের্সাস উজ্জল চাউল কল এর ভাড়াটিয়া ব্যবসায়ী আঃ রহমান এর ধান চাতালে শ্রমিকের কাজ করতেন। কাজ করাকালে মাঝের মধ্যেই স্বামী-স্ত্রী'র মাঝে বিবাদ হতো। এরইমাঝে শনিবার ২ ডিসেম্বর দিনগত রাতে অপর নারী-পুরুষ শ্রমিকের মতো তারা স্বামী-স্ত্রীও রাতের খাবার খেয়ে তাদের ঘরে ঘুমাতে যায়। রবিবার সকালে বেলা হওয়ার পরও তারা স্বামী-স্ত্রী কেউ ঘর থেকে বের না হওয়ায় এবং বাহির থেকে ঘরের দরজায় তালা ঝুলানো অবস্থায় দেখে অপর নারী শ্রমিকদের মাঝে সন্দেহ দেখা দেয় এবং প্রথমে ঘরের ভেতর গলাকাটা অবস্থায় লাইলী বেগম কে দু'জন নারী শ্রমিক দেখতে পেয়ে ডাক-চিৎকার দেয়। মহূর্তের মধ্যে ঘটনাটি জানাজানি হলে শত শত লোকজন এক নজর দেখার জন্য ঘটনাস্থলে ভীড় জমান। এক পর্যায়ে স্থানিয়রা ঘটনাটি নওহাটামোড় ফাঁড়ি পুলিশ কে জানালে সাথে সাথে নওহাটা ফাঁড়ি পুলিশের এসআই জিয়াউর রহমান সঙ্গীয় পুলিশ সহ ঘটনাস্থলে পৌছান এবং ঘটনাটি উর্দ্ধতন কর্মকর্তাকে জানান।
খবর পেয়ে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাফ্ফর হোসেন এবং ওসি (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ ঘটনাস্থলে পৌছানোর পর প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট অন্তে রবিবার দুপুর দেরটার দিকে ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার পূর্বক ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেন পুলিশ।
মৃতদেহ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মোজাফফর হোসেন জানান, খবর পেয়ে সঙ্গীয় অফিসার ফোর্স সহ ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করা হয় এবং ঘটনাস্থলে প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট অন্তে মৃতদেহটি উদ্ধার পূর্বক ময়না তদন্তের জন্য, নওগাঁ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। তিনি স্থানিয়দের বরাত দিয়ে বলেন, প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে স্বামী-স্ত্রী'র মাঝে বিবাদ (দ্বন্দ্বের) কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে থাকতে পারে। ঘটনার পর থেকে লাইলী বেগম এর স্বামী আমজাদ হোসেন পলাতক রয়েছেন। তবে পুলিশ তৎপর রয়েছে, পলাতক স্বামী আমজাদ হোসেনকে পেলে এহত্যা কাণ্ডের মূল রহস্য জানা যাবে।
সংবাদ সংগ্রহকালে রবিবার বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত এ বিষয়ে আইনানুগ পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
জনপ্রিয় খবর
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: