ধানের ফলন ভালো হওয়া সত্বেও ধানের দাম না পাওয়ায় হতাশ দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের ধান চাষী। বাজারে যে দাম তাতে লাভতো দূরের কথা উৎপাদন খরচ উঠা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছে কৃষক।
উপজেলার বেশ কিছু এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, নতুন ধান ঘরে তুলতে ব্যস্তু সময় পার করছেন কৃষক-কৃষাণীরা। কেউ মাঠে ধান কাটছেন, কেউবা আঁটি বাঁধছেন আবার অনেকে মাঠ থেকে নতুন ধান বাড়িতে আনছেন। বাড়িতে সেই ধান মাড়াই ও পরিষ্কারের কাজে ব্যস্ত পরিবারের সবাই। কিন্তু হাসি নেই কারও মুখে। কারণ একটাই বাজারে নেই ধানের দাম, উঠছে না তাদের উৎপাদন খরচও।
পৌর শহরের ধান চাষী আশিক মিন্জি বলেন, চলতি আমন মৌসুমে পনেরো বিঘা জমিতে মোটা ধান লাগিয়েছিলাম। আর বিঘা প্রতি ১৫ থেকে ১৬ হাজার টাকা উৎপাদন খরচে ধান হয়েছে ১৬-১৭ মণ। আরেক ধান চাষী ইউনুস হোসেন বলেন, সাত বিঘা জমিতে চিকন ধান লাগিয়ে ধান পেয়েছি বিঘা প্রতি ১৪ মণরো কিছু কম। সেই ধান মোটা-চিকন ভেদে ১০৭০ থেকে ১১২০ টাকা দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচও উঠছে না। যারা বর্গা নিয়ে জমি চাষ করেন তাদের এবার ঋণে ডুবতে হবে।
এলাকার কৃষক আতোয়ার রহমান বলেন, ধান বিক্রির টাকা দিয়েই সারা বছর পরিবার পরিজন নিয়ে চলতে হয় আমাদের। যে মৌসুমে ভালো দাম পাই সে বছর খুব ভালো চলে। কৃষি উপকরণ ও শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধিতে ধানের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। ফলন ভালো হলেও এ বছর আমাদের খুই লোকসান হচ্ছে,দাম নেই বাজারে। কিন্তু ধান বেচতে গেলে আমরা দাম পাই না। এ ভাবে চলতে থাকলে আমরা ধান আবাদ করবো কীভাবে। আমাদের কৃষকদের তো কোনো উন্নয়ন হলো না আজও।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান জানান, এবছর উপজেলায় ১১ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ হয়েছে। লক্ষমাত্রার চেয়ে বেশি ফলন হয়েছে।কৃষক মাড়াই শেষে ধান সঙ্গে সঙ্গে বাজারে নিয়ে আসায় দাম কম পাচ্ছে। এখন ধানের দাম কিছুটা কম হলেও তা বাড়বে। কৃষি বিভাগ কৃষকদের নানাভাবে সহযোগিতা করছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: