গাইবান্ধা গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের ছোট নারিচাগাড়ী গ্রাম থেকে হ্যাকার (প্রতারক) চক্রের মুল হোতা আপেল গ্রেফতার হয়ে ১৫১ধারায় জেল-হাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি হ্যাকারদের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন অ্যাপসের মাধ্যমে বিকাশ, নগদের এ্যাকাউন্ট হ্যাক করে দেশের বিভিন্ন স্থানের মানুষের সরকারি থেকে দেয়া অর্থ বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা,প্রতিবন্ধি ভাতা,শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তিসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিং এ্যাকাউন্ট থেকে লাখ-লাখ হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারক চক্র জ্বীনের বাদশা হ্যাকার। এসব জ্বীনের বাদশা হ্যাকার কোন সময় বিকাশ ও নগদ এজেন্টের দোকানে টাকা উত্তোলন করতে এসে অনেক সময় ধরাখেয়ে গ্যাং পর্যন্ত চিহ্নিত হয়।
দেশ ব্যাপী সরকারের সুবিধাভোগী এসব মানুষের একটা বড় অংশ নিদ্রিষ্ট সময়ে এ্যাকাউন্টে টাকা না পেয়ে স্ব-স্ব দপ্তরে অভিযোগও করে। কিন্ত তাদের কাছে কারা হ্যাক করেছে বিষয়টি ধরা না পড়ায় কিছুই করার থাকে না। তারা শুধু বিষয়টি আইন শৃংখলা কমিটির সভাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানান।এ হ্যাকারদের গ্রেফতারে মাঠে নামে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা।এরই ধারাবাহিকতায় রোববার বিকালে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গোবিন্দগঞ্জ থানার এ,এস আই আতোয়ার রহমানের নেতৃত্বে সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের ছোট নারিচাগাড়ী গ্রামের চিহ্নিত হ্যাকার সাহিদুলের বাড়ীর ৩টিরুমে ৮ জন হ্যাকার মিলে তাদের কার্যক্রম চলাকালে অভিযান পরিচলনার সময় ওই গ্রামের মৃত সাইফুলের ছেলে হ্যাকার আপেলকে গ্রেফতার সহ ৪টি মোবাইল জব্দ করে।
এঘটনায় অজ্ঞাত কারনে এ,এস আই আতোয়ার হোসেন রাত্রী কালিন পাহার সময় রাত আনুমানিক ২২টা ৫০মিনিট, অর্থাত রাত ১০ টা ৫০ মিনিটে গ্রেফতার দেখিয়ে দেবপুর বাজারে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দৌঁড়ে পালানোর সময় গ্রেফতার দেখানো হয়।তার যে সু নিদ্রিষ্ট অপরাধ রয়েছে তা গোপন করে ৮৯৮নং জিডিমূলে ১৫১ধারায় গ্রেফতার দেখিয়ে কোর্টে প্রেরন করে।এর আগে গত কিছু দিন পূর্বে হ্যাকার আপেলসহ ১১জন হাতে নাতে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হলে স্থানীয় মেম্বারের মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ভ্রাম্যমান আদালতে ২০০টাকা করে জরিমানা দিয়ে পার পেয়ে যান। পরে ৬লাখ টাকায় রফাদফার অভিযোগ উঠে।
সচেতন মহল বলেন,এলাকার চিক্রিত এরা ১১জন, এদের এসব অর্পকর্মের কথা সবার জানা। এরা সাহিদুলের বাড়িতে দীর্ঘদিন থেকে একজন স্থানীয় বিট পুলিশ, একজন মেম্বার,২জন ছাত্রলীগ নেতার সাথে আতাত করে এসব অর্পকর্ম অব্যাহত রেখেছে।ধরা পড়লে ওই লাইনে তদবির বানিজ্যে আইনের ফাঁক ফোকরে বেড়িয়ে যাচ্ছে। সচেতন এলাকাবাসীর দাবী হ্যাকার, জ্বীনের বাদশা দমন করতে প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের নজরদারি করে সু-নিদ্রিষ্ট অপরাধে তাদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে । এ বিষয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সামছুল আলম শাহ্ আমাদের সময় প্রতিনিধিকে বলেন, আটককৃত আপেলকে ১৫১ধারায় চালান দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য: গোবিন্দগঞ্জ দরবস্ত ও তালুককানুপুর এলাকায় এক সময় জ্বীনের বাদশা প্রতারক চক্র দেশ ব্যাপী নিরিহ মানুষজনকে বিভিন্ন মোবাইল ফোনে পীর বাবা,অলি আউলিয়া মাজার থেকে জ্বীন,পরী পরিচয় দিয়ে ধন-দৌলত দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লাখ-লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে শত-শত মানুষকে নি:স্ব করেছে। এসব জ্বীনের বাদশার খপ্পরে পড়ে অনেকে জমি-জমা, বাড়ী ঘর বিক্রি করে টাকা পয়সা দেওয়ার পরও ধর্ষন,খুম,গুমের শ্বিকার হয়েছেন।এসব জ্বীনের বাদশা প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে থানায় বেশ কিছু মামলা দায়ের হয়।এলাকায় সামাজিক আন্দোলন গড়ে উঠে। আইনশৃংখলা বাহীনি র্যাব-পুলিশ-গোয়েন্দা পুলিশসহ বিশেষ করে ঢাকার পুলিশের বিশেষ শাখার সদস্যদের তৎপরতায় এসব জ্বীনের বাদশার একাধিক মামলায় গ্রেফতার হতে থাকে অপরাধীরা।পুলিশের বিশেষ শাখার তৎপরতায় তদবির করতে না পেরে কোনঠাসা হতে থাকে জ্বীনের বাদশারা।
জ্বীনের বাদশা প্রতারকরাও চিহ্নিত হতে থাকে।সময়ের পরিবর্তনে জ্বীনের বাদশারাও প্রতারনার কৌশল পরিবর্তন করে করোনা কাল থেকে তারা বিভিন্ন মোবাইল ফোনে বি়ভিন্ন সীম,ফোন কোম্পানির কর্মকর্তা সেজে লটারীর পুরস্কার জিতেছেন,ব্রান্ডের কার গাড়ী,প্রলোভন দেখিয়ে বিশেষ অ্যাপসের মাধ্যমে প্রতারক চক্র হ্যাকার জ্বীনের বাদশারা প্রতারনা করে আসছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: