পাবনার ঈশ্বরদী জংসন স্টেশন এলাকায় দুর্বৃত্তদের রেখে যাওয়া লাল টেপ পেঁচানো একটি বস্তুটি বোমা জব্দ করেছে র্যাব। পরে সেটি নিষ্ক্রিয় করেছে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা। শুক্রবার (০৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বোমাটি নিষ্ক্রিয় করা হয়।
ঈশ্বরদী রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর এএসআই সম্রাট হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার (০২ নভেম্বর) দিবাগত রাত ৯টার দিকে স্টেশন ও রেলওয়ে ইয়ার্ডে টহলের সময় হাবিলদার আব্দুল হান্নান প্রথমে এটি দেখতে পান। রেলওয়ে জংশন ষ্টেশন ইয়ার্ডে থেমে থাকা আন্ত:নগর ট্রেনের এসি বগির নিচে বস্তুটি দেখতে পাওয়া যায়। তিনি খবর দিলে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর পরিদর্শক ফিরোজ আহমেদসহ ষ্টেশনে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা রেলওয়ে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বোমাসাদৃশ একটি বস্তু দেখতে পান। তারপর থেকে ঘটনাস্থল রেলওয়ে পুলিশ সদস্যরা ঘিরে রাখে। খবর দেয়া হয় র্যাবের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে। ঘটনাস্থলে যায় র্যাব-১২ পাবনার সদস্যরাও।
খবর পেয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সুবীর কুমার দাশ ও সহকারী কমিশনার ভূমি টিএম রাহনিস কবির শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ সময় ইউএনও সুবীর কুমার দাশ বলেন, ঈশ্বরদী একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও দেশের সর্ববৃহৎ রেলওয়ে জংশন ষ্টেশন হওয়া স্বত্বেও এখানে সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। এটি দুঃখজনক। সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের সহজেই সনাক্ত করা যেত।
এরপর শুক্রবার (০৩ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে রাজশাহী র্যাব-৫ এর একটি বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের বিশেষজ্ঞ টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে ওই বস্তুটি জব্দের পর সেটি বোমা হিসেবে সনাক্ত করে তারা। উদ্ধারের পর বোমাটি নিষ্ক্রিয় করা হয়।
রেলওয়ের পাকশী জেলা পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে র্যাবের বোমা নিষ্ক্রিয় টিমকে খবর দেওয়া হয়। তারা এসে সেটি উদ্ধার ও নিষ্ক্রিয় করে।’
বোমাটি জব্দ ও নিষ্ক্রিয় করার পর সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন র্যাব-১২ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মারুফ হোসেন পিপিএম। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালে তারা আমাকে র্যাব-৫ এর বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সাথে সমন্বয় করে কাজ করার জন্য নির্দেশনা দেন। পরে র্যাব-৫ এর বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা সকালে ঘটনাস্থলে এসে বোমাটি জব্দ ও নিষ্ক্রিয় করে।’
তিনি আরো জানান, ‘বোমাটির ভিতর উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন বিস্ফোরক ছিল। সময়মতো উদ্ধার ও নিষ্ক্রিয় করা না গেলে বিস্ফোরিত হয়ে বড় ধরনের নাশকতার ঘটনা ঘটতে পারতো। বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে এটি দু:খজনক। জনমনে ভীতি সঞ্চার ও দেশের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করতে দুষ্কৃতিকারী গোষ্ঠি এ কাজ করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: