কুড়িগ্রামে চাঁদাবাজি ও বাড়িঘর ভাঙচুরের ঘটনা তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় ইউপি সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় সরকার পল্লী ও সমবায় মন্ত্রণালয় ইউপি-১ শাখা এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধান গত ১২ অক্টোবর'২৩ স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই প্রজ্ঞাপন জারি করেন।
জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয় 'যেহেতু কুড়িগ্রাম সদর উপজেলাধীন যাত্রাপুর ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে সদর থানায় দায়েরকৃত মামলা নং-১৪, তাং-৮ নভেম্বর'২২ গৃহীত হওয়ায় স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯-এর ৩৪(১) ধারা অনুযায়ী কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করায় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেনকে স্বীয় পদ থেকে সাময়িকভাবে দরখাস্ত করা হলো।' ২৩ অক্টোবর-২৩ইং তারিখের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশের সন্তোষজনক জবাব না দিলে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করার সুপারিশ করেছেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত যাত্রাপুর ৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন বলেন, 'আমার বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক। আমি কোনভাবেই চাঁদাবাজি কিংবা ভাঙচুরের সাথে জড়িত ছিলাম না। আমাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। আমি আজকালের মধ্যে ডিসি স্যারের চাওয়া জবাব প্রদান করব।'
এ ব্যাপারে সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য আন্না খাতুনের দেবর মামলার বাদী এরশাদুল হক বলেন, 'একজন ইউপি সদস্য জনগণের সেবক না হয়ে যখন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়, তখন জনপ্রতিনিধির কাছে আর কি প্রত্যাশা করা যায়। জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানাই এই কারণে যে, সন্ত্রাসী ইউপি সদস্য আনোয়ার মেম্বারের বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করায়। তাকে বরখাস্ত করার মধ্য দিয়ে সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক।'
এ ব্যাপারে কথা হলে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, 'ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেনের অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। আগামী দশ কার্য দিবসের মধ্যে কেন তাকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হবে না-এই মর্মে একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। তিনি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সন্তোষজনক জবাব না দিলে তাকে চূড়ান্তভাবে বরখাস্ত করা হবে।'
উল্লেখ্য, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যাত্রাপুর ইউপির সংরক্ষিত (৭,৮,৯) ওয়ার্ডের নারী সদস্য আন্না খাতুনের দেবর নুর আলমের নিকট নির্বাচনী ব্যয় বাবদ ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেন ও তার লোকজন। এরই প্রেক্ষিতে সংরক্ষিত ইউপি সদস্যের দেবর এরশাদুল হক বাদী হয়ে ২১জনকে আসামী করে কুড়িগ্রাম সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: